ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত ১২ জুন অহমদাবাদ বিমানবন্দরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার AI171 বোয়িং ৭৮৭ বিমানের জ্বালানির সুইচ ‘RUN’ থেকে ‘CUTOFF’ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন উঠেছিল (Plane Crash in Ahmedabad)। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৬০ জন। এক মাস পর ভারতের এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)-এর প্রাথমিক রিপোর্টে জ্বালানির স্যুইচ সংক্রান্ত ইঙ্গিত উঠে আসতেই মুখ খুলল আমেরিকার ফেডেরাল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA)।
FAA জ্বালানির স্যুইচের লকিং ব্যবস্থা ‘অসুরক্ষিত নয়’ (Plane Crash in Ahmedabad)
FAA একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, বোয়িং ৭৮৭-সহ সংস্থার একাধিক মডেলে ব্যবহৃত জ্বালানি স্যুইচ এবং তার ‘লকিং’ ব্যবস্থা “অসুরক্ষিত নয়” (Plane Crash in Ahmedabad)। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বোয়িংয়ের এই সুইচগুলি নিয়ে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যাতে ‘এয়ারওয়র্দিনেস ডিরেক্টিভ’ জারি করা প্রয়োজন। সুতরাং কোনো বাধ্যতামূলক রদবদলের দরকার নেই।” অর্থাৎ, বিমান নির্মাতা সংস্থাগুলিকে আইনত বাধ্য করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, এমনটাই মত FAA-এর।
বোয়িংও একই সুরে বলল— “পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই” (Plane Crash in Ahmedabad)
FAA-র বিবৃতির পরে, বোয়িং সংস্থাও পৃথক বার্তা পাঠায় সমস্ত বিমান সংস্থাগুলির কাছে (Plane Crash in Ahmedabad)। সেখানে তারা স্পষ্ট করেছে, “জ্বালানির সুইচের লকিং ব্যবস্থায় কোনো ঝুঁকি নেই। এই মুহূর্তে কোনো বদলের প্রয়োজন নেই।” তবে উল্লেখযোগ্যভাবে, এই বক্তব্য এসেছে AI171-এর ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশের পরই। যে রিপোর্টে দেখা যায়, জ্বালানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুই ইঞ্জিনই অকেজো হয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: CJI BR Gavai : সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি প্রধান বিচারপতি বিআর গবই
কী ঘটেছিল সেই দিন? (Plane Crash in Ahmedabad)
১২ জুন, বোয়িং ৭৮৭ বিমানটি অহমদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড়েছিল (Plane Crash in Ahmedabad)।
- রানওয়ে ছাড়ার মাত্র ৩২ সেকেন্ড পর, বিমানটি দুই ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে গিয়ে ভেঙে পড়ে।
- মৃত্যুর সংখ্যা— ২৬০।
- ককপিটের রেকর্ড করা কথোপকথন অনুযায়ী, এক পাইলট বলেছিলেন, “তুমি কেন জ্বালানি বন্ধ করে দিলে?”
আর এক জন বলেন,
“আমি কিছুই বন্ধ করিনি!”
এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, জ্বালানির স্যুইচে কোনো আকস্মিক বদল বা ত্রুটি ঘটেছিল, যার ফলে ঘটেছিল মারণ দুর্ঘটনা।

অতীতের সতর্কবার্তাও সামনে এল (Plane Crash in Ahmedabad)
এই ঘটনার পরে চর্চা শুরু হয় FAA-এর ২০১৮ সালের একটি ‘Special Airworthiness Information Bulletin (SAIB)’ ঘিরে, যেখানে বলা হয়েছিল,
- বোয়িং ৭৩৭-এর কিছু বিমানে জ্বালানি স্যুইচ ভুলভাবে বসানো হয়েছে,
- ‘লকিং ফিচার’ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে,
- তবে তা ছিল শুধু একটি উপদেশাবলি (advisory), কোনও বাধ্যতামূলক নির্দেশ নয়।
অনেক বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মতে, “এই সতর্কবার্তাকে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখলে হয়তো AI171 দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।”
আইনি বাধ্যবাধকতা নেই, সতর্কতা থেকেই সাবধানতা (Plane Crash in Ahmedabad)
FAA জানায়, যে কোনও যন্ত্রাংশে বড় ত্রুটি থাকলে ‘Airworthiness Directives’ জারি করা হয়। তবে বোয়িং ৭৮৭-এর ক্ষেত্রে তা হয়নি, অর্থাৎ সুইচকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলা হয়নি। সেই কারণে, এয়ার ইন্ডিয়াও (Air India) আইনি বাধ্যবাধকতায় সুইচ সংস্কার করতে বাধ্য ছিল না(Plane Crash in Ahmedabad)।
আন্তর্জাতিক বিতর্কের মুখে বোয়িং (Plane Crash in Ahmedabad)
বিগত বছরগুলিতে বোয়িং একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে,
- ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুর্ঘটনা (লায়ন এয়ার ও ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স)
- FAA-এর তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন
- এবার ৭৮৭ মডেলের জ্বালানি স্যুইচ ও লকিং সিস্টেম নিয়েও বিতর্ক তৈরি হল
বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, “যদি ত্রুটির আশঙ্কা থাকেই, তবে সংস্কারের পরিবর্তে শুধুই বিবৃতি যথেষ্ট নয়। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করা দরকার (Plane Crash in Ahmedabad)।” FAA ও বোয়িং দুই সংস্থাই বোয়িং ৭৮৭-এ ব্যবহৃত জ্বালানি সুইচকে নিরাপদ বললেও, ভারতের AI171 মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর জনমনে ও বিশেষজ্ঞ মহলে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। অন্তত একাংশ মনে করছেন, সতর্কতা হিসেবে লকিং সিস্টেমে পর্যালোচনা করা উচিৎ ছিল। ‘নিরাপত্তা প্রটোকল কি শুধুই নিয়ম মানার জন্য, নাকি সত্যিকারের রক্ষা করার জন্য?’