ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এবছর দুর্গাপুজো এসেছে একটু তাড়াতাড়ি (Kumartuli)। পুজোর এখনো প্রায় পঞ্চাশ দিন বাকি থাকতেই রাজ্যজুড়ে চলছে প্রস্তুতির জোরদার কাজ। কুমোরটুলি, নদিয়ার ফুলিয়া, কৃষ্ণনগরের মত বিখ্যাত মৃৎশিল্পী অঞ্চলগুলো ইতিমধ্যেই ব্যস্ত হয়েছে প্রতিমা গড়ার কাজে। কিন্তু এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে সেই কাজে পড়েছে বড়সড় ধাক্কা।
বর্ষার শুরু থেকেই কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গজুড়ে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে । এই কারণে মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ ঠিকমতো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না। গলির পর গলি জলমগ্ন, বাড়ছে সমস্যা।
জমা জলে নাজেহাল কুমোরটুলি (Kumartuli)
কলকাতার কুমোরটুলিতে অনেক জায়গাতেই জল জমে গিয়েছে। নিচে জমে থাকা জল আর উপরে চলতে থাকা বৃষ্টির মাঝে কোনোভাবে প্লাস্টিকের ত্রিপল খাটিয়ে দুর্গা প্রতিমাকে রক্ষা করার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন শিল্পীরা।
ফুলিয়াতেও জলাবদ্ধতা, বন্ধ প্রতিমার কাজ
নদিয়ার ফুলিয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পাল পাড়ার শিল্পীদের অবস্থাও শোচনীয়। চারিদিকে হাঁটু জল। শিল্পীরা জানিয়েছেন, জল জমে থাকার কারণে শ্রমিকরা আসতে পারছেন না। বহু কারখানায় কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ।

অর্ডার থাকলেও কাজের গতি কম (Kumartuli)
ফাল্গুন-চৈত্র মাস থেকেই অর্ডার নেওয়া শুরু হয়। এবছরও ব্যতিক্রম হয়নি। কাঠামো তৈরি ও প্রাথমিক মাটির কাজ শেষ হলেও, এখনকার বৃষ্টির প্রকোপে মাটি ঠিকমতো শুকোচ্ছে না। ফলে রং, পোশাক ও অলঙ্কার বসানোর কাজ আটকে যাচ্ছে।
আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে (Kumartuli)
শিল্পীরা আশঙ্কা করছেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে প্রতিমা ঠিক সময়ে ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে পুজোর ক্লায়েন্ট হারানো এবং বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। বহু শিল্পী ইতিমধ্যেই আগাম টাকা খরচ করে বসে রয়েছেন।
পুজোর আয়োজকরাও পিছিয়ে আসছেন
নিয়মিত জলাবদ্ধতার কারণে অনেক পুজো কমিটি প্রতিনিধিরাও অর্ডার দিতে এসে পিছিয়ে যাচ্ছেন। কেউই হাঁটু জল ডিঙিয়ে প্রতিমা দেখতে কিংবা অর্ডার নিশ্চিত করতে চাইছেন না।

প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে শিল্পীরা
মৃৎশিল্পীদের দাবি, পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক হয় তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দরকার। জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও অস্থায়ী ছাউনি দেওয়ার মতো ব্যবস্থা করলেই কিছুটা স্বস্তি মিলবে।
আরও পড়ুন: Indrani Paul: রূপকথার জীবন, ভালোবাসার মানুষকে বাঁচাতে মরণের খেলায় ইন্দ্রানী!
পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু প্রকৃতির খামখেয়ালিতে থমকে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিমা নির্মাণশিল্প। জলমগ্ন শহর ও মফস্বলের অলিগলিতে শিল্পীদের চোখে এখন শুধুই উদ্বেগ।