ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দক্ষিণ এশিয়ার জটিল ভূরাজনৈতিক আবহে এক নতুন মাত্রা যোগ হল ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে (S Jaishankar)। বৃহস্পতিবার তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (Dr. S. Jaishankar)। আফগানিস্তানে তালিবান দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর এই প্রথমবার দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ে সরাসরি আলোচনা হল। এই সংলাপকে শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং বৃহত্তর কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।
হামলার নিন্দা তালিবানের (S Jaishankar)
আলোচনার অন্যতম প্রেক্ষাপট ছিল সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলা (S Jaishankar)। তালিবান সরকারের তরফে ওই হামলার নিন্দা প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে আফগান বিদেশমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার নিন্দা জানানোর জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।” এর পাশাপাশি ভারত-আফগান সম্পর্কের চিরকালীন বন্ধন ও পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও গভীর করার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
জয়শঙ্করের অবস্থান (S Jaishankar)
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, হামলার নেপথ্যে তালিবান-যোগ থাকতে পারে(S Jaishankar)। সেই দাবি সরাসরি খারিজ করে দেয় আফগান সরকার। তালিবান সরকারের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে জয়শঙ্কর লেখেন, “মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন প্রতিবেদন দিয়ে ভারত-আফগানিস্তানের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টির চেষ্টাকে যে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, তার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ।”

ভারত নিয়ে তালিবানের অবস্থান (S Jaishankar)
আলোচনায় উঠে আসে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তালিবানের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান হাফিজ় জ়িয়া আহমেদ জানান, ভারতের তরফে আফগান নাগরিকদের আরও বেশি ভিসা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে(S Jaishankar)। এছাড়া ভারতে বন্দি থাকা আফগান নাগরিকদের মুক্তি এবং ইরানে ভারতের সাহায্যে পরিচালিত চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এই বন্দর ভারত, আফগানিস্তান ও ইরানকে যুক্ত করে মধ্য ও মধ্য-পশ্চিম এশিয়ায় ভারতের কৌশলগত অবস্থানকে দৃঢ় করে।

আরও পড়ুন: Putin Zelenesky Meeting : বৃহস্পতিতেও রাশিয়া-ইউক্রেন “সংঘর্ষবিরতি” আলোচনা নিয়ে অনিশ্চয়তা !
ভারত আফগান সম্পর্ক (S Jaishankar)
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান এবং আফগান তালিবান সরকারের সম্পর্ক বর্তমানে টানাপোড়েনে ভরা(S Jaishankar)। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে বারংবার তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর হামলায় রক্তাক্ত হওয়ার পর, ইসলামাবাদ তালিবান সরকারের বিরুদ্ধে এই গোষ্ঠীকে মদত দেওয়ার অভিযোগ তোলে। এই অবস্থায় ভারত যদি কাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করে, তা পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে আরও কোণঠাসা করতে পারে।তালিবান সরকারকে ভারত এখনও আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক স্বীকৃতি না দিলেও, এই সংলাপ পরিষ্কারভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নয়াদিল্লি বাস্তবতার ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় নিজেদের অবস্থান স্থির করছে। মানবিক সহায়তা, নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং কৌশলগত যোগাযোগ—এই তিনটি স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতে ভারত-আফগান সম্পর্ক আরও কী রূপ নেয়, সেদিকেই এখন নজর আন্তর্জাতিক মহলের।