ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কেরালার একটি আদালত সোমবার তিরুবনন্তপুরমের ২৩ বছর বয়সী বাসিন্দা শ্যারন রাজের হত্যার মামলায় (Sharon Raj murder case) মূল অভিযুক্ত গ্রীষ্মাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে। শ্যারনের সঙ্গে গ্রীষ্মার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
গ্রীষ্মার কাকা নির্মল কুমারকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অপহরণের অপরাধে গ্রীষ্মাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং তদন্তে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য আরও ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
কে দিলেন রায় (Sharon Raj murder case)
এই রায় (Sharon Raj murder case) নেইয়াট্টিনকারা অতিরিক্ত সেশন আদালতের বিচারক এ এম বাসির দেন। ১৭ জানুয়ারি বিচারক গ্রীষ্মা এবং তার কাকাকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
কোন কোন ধারায় দোষী? (Sharon Raj murder case)
আদালত গ্রীষ্মাকে (Sharon Raj murder case) ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩২৮ (বিষ প্রয়োগে আঘাত করা), ৩০২ (খুনের শাস্তি), এবং ২০১ (প্রমাণ লোপাট) ধারায় দোষী ঘোষণা করেছে।
গ্রীষ্মার কাকা নির্মলকুমারকেও ২০১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তবে গ্রীষ্মার মাকে প্রমাণের অভাবে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
কী ঘটেছিল?
শ্যারন রাজ, যিনি বি.এসসি রেডিওলজি-র শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন, কন্যাকুমারির একটি প্রাইভেট কলেজে পড়াকালীন গ্রীষ্মার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। গ্রীষ্মা তখন সাহিত্য বিষয়ের ছাত্রী ছিলেন। তারা প্রায় এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, গ্রীষ্মা তার পরিবারের পক্ষ থেকে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা হওয়ার পর শ্যারনের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করতে চান। এর জন্য তিনি তার মা এবং কাকার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে শ্যারনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর শ্যারন গ্রীষ্মার কন্যাকুমারির বাড়িতে যান। সেখানে গ্রীষ্মা তাকে একটি আয়ুর্বেদিক টনিকের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ান বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: Arvind Kejriwal: কেজরির গাড়ি উপর হামলা, উড়ে এল পাথর! আপের নিশানায় বিজেপি প্রার্থী
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, গ্রীষ্মা, তার মা এবং কাকা প্রমাণ লোপাটের জন্য বিষের বোতল লুকিয়ে রাখেন। কিছু দিনের মধ্যেই শ্যারনের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে এবং ২৫ অক্টোবর, ২০২২-এ বহু অঙ্গ অকেজো হয়ে তার মৃত্যু হয়।
শুরু হয় ক্ষোভ
এই ঘটনা জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এর পর ডিএসপি জনসনের নেতৃত্বে ক্রাইম ব্রাঞ্চের একটি বিশেষ তদন্তকারি দল মামলার গভীর তদন্ত চালায়।
গ্রেফতার এবং বিচার
৩১ অক্টোবর, ২০২২-এ গ্রীষ্মাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার মা এবং কাকাকেও গ্রেফতার করা হয়। প্রসিকিউশন গ্রীষ্মার বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আনে।
এক বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩-এ কেরালা হাইকোর্ট গ্রীষ্মাকে জামিন দেয়। তবে জামিনের উপর কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়। এরপরেও গ্রীষ্মা এবং তার সহযোগীরা বিচারাধীন ছিলেন।