ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (Shashi Tharoor) জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারত যে কঠোর আঘাত হেনেছে, সেটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিচ্ছন্ন ও স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দিতে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে। সেই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে আছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর, যিনি আমেরিকার সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক মঞ্চে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রশংসা করেন। বিরোধী দলের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও থারুরের এই উদ্যোগ বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার বার্তা (Shashi Tharoor)
নিউইয়র্কে ৯/১১ হামলার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে (Shashi Tharoor) থারুর বলেন, “এই শহর এখনও সন্ত্রাসের দাগ বহন করে।” ভারতে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাস হামলার পরে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নিউইয়র্ক সফর সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার একটি বার্তা বহন করছে বলে তিনি মনে করেন। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানে ন’টি জঙ্গি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। শশী থারুর সেই অভিযানের প্রশংসা করে বলেন, “বিরোধী দলের সদস্য হলেও আমি বলছি, এমন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে। এটা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ছিল।”
মোদী সরকারের সঙ্গে থারুরের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জল্পনা (Shashi Tharoor)
থারুরের এই বক্তব্যের পেছনে একটি রাজনৈতিক কৌশলও (Shashi Tharoor) রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, কেন্দ্র থেকে সাতটি প্রতিনিধিদলের জন্য চারজন সদস্যের নাম কংগ্রেসকে প্রেরণ করতে বলা হলেও তাতে থারুরের নাম ছিল না। তারপরেও তার নাম রাখা হয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে, যা কংগ্রেসে অস্বস্তি তৈরি করেছে এবং মোদী সরকারের সঙ্গে থারুরের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছে। নিউইয়র্কে ভারতীয় উপদূতাবাসে বসে থারুর স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি বিরোধী দলের সদস্য এবং এই ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বিষয়টি আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরেছেন।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা
আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছেন বলে দাবি করেন। সেই কারণে সন্ত্রাসবাদ এবং কাশ্মীর সংক্রান্ত ভারতের অবস্থান তুলে ধরার ভার এই প্রতিনিধি দলের কাঁধে পড়েছে। থারুর বলেন, “আমরা সব ধরনের আন্তর্জাতিক উপায় চেষ্টা করেছি — অভিযোগ, দলিলাদি, সবকিছু। কিন্তু পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের কোনো উদ্যোগ দেখায়নি।”
সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল!
তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল থেকে যে ক্ষতি হবে, তা পাকিস্তানই ভোগ করবে।” থারুর স্পষ্ট করেছেন, “ভারত যুদ্ধের পথে যেতে চায় না, বরং অর্থনীতি উন্নয়নে ও নাগরিক জীবনে পরিবর্তনে বেশি মনোনিবেশ করেছে। তবে পাকিস্তান যেন সন্ত্রাসের মাধ্যমে তাদের স্বার্থ সাধনের চেষ্টা বন্ধ করে।”

সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ভারতের অবস্থান
থারুরের প্রতিনিধিদলে আছেন বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা, যেমন- বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য, শশাঙ্ক মণি ত্রিপাঠী, শিবসেনার মিলিন্দ দেওরা সহ আরও অনেকে। আমেরিকা ছাড়াও এই দল গায়ানা, কলম্বিয়া, পানামা এবং ব্রাজিলেও সফর করবে, যেখানে তারা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ভারতের অবস্থান তুলে ধরবে।
আরও পড়ুন: Spy Arrest: পাকিস্তানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গুজরাত-রাজস্থানে গ্রেফতার দুই!
এই সফর ও প্রতিনিধিদলের কাজকে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী সংগ্রামের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে এটি পাকিস্তানের সন্ত্রাসপৃষ্ঠপোষকতার বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন।