ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চুরি করতে এসে কাজ ফেলে মাঝপথেই ঘুমিয়ে পড়ল চোর (Sleeping Thief)! তারপরে যা হওয়ার তাই হল—গভীর ঘুমের ফাঁকে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল অভিযুক্ত। মনে হতেই পারে, এটা কোনো কল্পগল্প বা হাসির নাটক! কিন্তু না—এই অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটেছে বাস্তবেই, উত্তরপ্রদেশের কানপুর শহরের নাজিরবাদ থানার অন্তর্গত এক আবাসনে।
ঘটনার আশ্চর্য মোড় এবং চোরের অদ্ভুত আচরণে হতবাক এলাকাবাসী থেকে শুরু করে পুলিশও। গৃহস্থের বিছানায় আরামে ঘুমিয়ে পড়া এক চোরকে হাতেনাতে ধরল গৃহস্বামী। ঝোলা ভর্তি টাকা-পয়সা, গয়না ও অন্যান্য মালপত্র থাকার পরেও নিরাপদে পালানো তো দূরের কথা, নিজের কাজ শেষ না করেই ঘুমিয়ে পড়ল সে।

কীভাবে ঘটল এই কাণ্ড? (Sleeping Thief)
ঘটনা শুরু হয় এক গভীর রাতে (Sleeping Thief)। কানপুরের নাজিরবাদ এলাকায় এক ব্যক্তি নিজের বাড়িতে ঢুকে দেখে, আলমারির লকার খোলা। সব তছনছ করে রাখা হয়েছে। বুঝতে বাকি থাকে না—চুরি হয়েছে।
আসলে এর কিছুক্ষণ আগেই, অভিযুক্ত চোর প্রথমে একটি বাড়িতে ঢুকে লকার ভেঙে মূল্যবান সামগ্রী যেমন টাকা, গয়না, মোবাইল ইত্যাদি চুরি করে। তারপর ঝোলা ভর্তি মালপত্র নিয়ে পাশের বাড়িতে ঢোকে। উদ্দেশ্য সম্ভবত আরও কিছু মূল্যবান বস্তু চুরি করা।
কিন্তু সেই বাড়ির খালি বিছানায় চোখ পড়তেই সমস্ত পরিকল্পনা গুলিয়ে যায়। দীর্ঘরাত পরিশ্রমে ক্লান্ত, কিংবা মদ্যপ অবস্থায় অসচেতন চোর বাবাজি ওই বিছানায় শুয়ে পড়ে এবং ঘুমিয়ে পড়ে গা এলিয়ে।
সকালে উঠে গৃহস্থের চক্ষু চড়কগাছ (Sleeping Thief)
পরদিন ভোরে ঘুম ভেঙে ওঠেন সেই বাড়ির মালিক অনিল, পেশায় একজন টোটা চালক। প্রতিদিনের মতো দিন শুরু করতে গিয়েই চোখে পড়ে বিছানায় শুয়ে রয়েছেন এক অচেনা ব্যক্তি!
প্রথমে চমকে ওঠেন অনিলবাবু। ভাবতে পারেন না, তাঁদের ঘরে ঢুকে কেউ এমন নির্ভয়ে ঘুমাচ্ছে! ধীরে ধীরে পরিস্থিতির বিশদে গেলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়—এই ব্যক্তি একজন চোর।
ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগিয়ে, তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও, প্রথমে কোনও সদুত্তর মেলেনি। এরপর তাঁর সঙ্গে থাকা ঝোলাটি খোলার পর বেরিয়ে আসে চুরি হওয়া গয়না, টাকা, মোবাইল ও অন্যান্য সামগ্রী।
পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ (Sleeping Thief)
অনিলবাবু তৎক্ষণাৎ স্থানীয় থানায় খবর দেন। নাজিরবাদ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং ঘুমন্ত চোরকে গ্রেপ্তার করে।
তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অভিযুক্ত ব্যক্তি সম্ভবত মদ্যপ অবস্থায় চুরি করতে এসেছিল। সেই কারণেই তার শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য এতটা বিঘ্নিত হয় যে, মাঝপথেই ঘুমিয়ে পড়ে।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযুক্তের অতীত ইতিহাস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে পূর্বেও কোনও অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে কিনা, তাও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Apu-Bubly: আমেরিকায় একান্তে শাকিব-বুবলি, অপুর রিঅ্যাকশনে ঝড় নেট পাড়ায়!
এই চোরের গল্প এখন কানপুরের অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ বলছে ‘ঘুমকাতুরে চোর’, কেউ বলছে ‘ঘুমিয়ে ধরা অপরাধী’। তবে একথা বলা যেতেই পারে—এটি এমন এক ঘটনা যা হাসির মোড়কে পুলিশের সাফল্যকেও তুলে ধরেছে।