ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে হরিয়ানা হিসারের ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে (Jyoti Malhotra)। তার বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কার্যকলাপ এবং আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছে। জ্যোতি ‘ট্র্যাভেল উইথ জো’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালান। পাকিস্তান ভ্রমণকালে তিনি আইএসআই-এর এজেন্টদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে হরিয়ানার ছোট্টো শহর হিসারে। প্রতিবেশীরা ভাবতেই পারছেন না পাশের বাড়ির প্রাণোচ্ছল মেয়েটি শত্রুদেশের হয়ে চরবৃত্তিতে লিপ্ত হয়েছিল। তেমনই তাদের মনে করিয়ে দিয়েছে, অতীতের কিছু ভয়ঙ্কর স্মৃতিও।
আরও পড়ুন- IMF: ভারতের প্রবল আপত্তি, পাকিস্তানের উপর ১১ শর্ত চাপাল আইএমএফ, দাবি Report-এ
হিসার কেন গুরুত্বপূর্ণ (Jyoti Malhotra)
হিসারে সেনা ক্যান্টনমেন্টএবং একটি বিএসএফ ক্যাম্পাস রয়েছে। আর এই শহর থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরে সিরসায় একটি বায়ুসেনা ঘাঁটি রয়েছে। সেই জন্য গত ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিসার পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে, জ্যোতি মালহোত্রার গ্রেফতারির পর অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তির আতঙ্কে ভুগছেন বাসিন্দারা। এর আগে ২০০১ সালে,পাকিস্তানি নাগরিক আসগর আলী জাল ভারতীয় নথি ব্যবহার করে হিসারের সেনা ক্যান্টনমেন্টএলাকায় অনুপ্রবেশ করেছিল। কিন্তু দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করার সময় তাকে রাজস্থানের বিকানের থেকে গ্রেফতার করা হয়।
একের পর এক গুপ্তচর পাকড়াও (Jyoti Malhotra)
এরপর ২০০৩ সালে, হিসারের বাল্মীকি বস্তির বাসিন্দা মহাম্মদ হায়দারকে সংবেদনশীল তথ্য ভাগ করে নেওয়ার অভিযোগেআম্বালায় আটক করা হয়েছিল। ঠিক তার দুই বছর পর ২০০৫ সালে, আখতার উল্লাহ মুনির ‘সমীর’-কে আটক করা হয়। সেও হিসারের কৃষ্ণ নগরে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছিল।তার বিরুদ্ধে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার সামরিক তথ্য পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ ছিল।এরপর ২০০৬ সালে জলন্ধরে জ্যোতিপ্রসাদ এবং বাবুলালের গ্রেফতারির পরেও হিসারের সঙ্গে যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছিল।গোয়েন্দা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, দেশজুড়ে গ্রেফতার হওয়া কমপক্ষে পাঁচজন গুপ্তচর হিসার থেকে জাল নথি সংগ্রহ করেছে।ফলে এই শহর জালিয়াতির কেন্দ্র হিসাবে উঠে আসছে। ২০২০ সালের এপ্রিলে জিন্দাল ব্রিজের কাছে, হিসার পুলিশ পাকিস্তানি নাগরিক সন্দেহে এক যুবককে আটক করে। যদিও এই ঘটনার আনুষ্ঠানিক বিবরণ কখনও প্রকাশ করা হয়নি।
জ্যোতি মালহোত্রার বাবার প্রতিক্রিয়া (Jyoti Malhotra)
জ্যোতির বাবা হরিশ মালহোত্রা বলেন, ‘নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও তুলতে ও প্রায় পাকিস্তান-সহ অন্যান্য জায়গায় যেত।’ তবে গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও হরিশ বলেন, ‘যদি ওখানে তাঁর বন্ধু থাকে, তবে ও তাঁদের ফোন করতে পারবে না? আমার কোনও দাবি নেই। কিন্তু আমাদের যে ফোনগুলি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে তা ফেরত দেওয়া হোক।’ উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ভারতে পাক দূতাবাস কর্মী এহসান উর রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে জ্যোতির আলাপ। ক্রমে ঘনিষ্ঠতা। এই দানিশকে ইতিমধ্যেই পাক দূতাবাসে থেকে গুপ্তচরবৃত্তির আড়ালে ভারত থেকে বের করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। তাকে ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ অর্থাৎ অবাঞ্চিত ব্যক্তি বলে বিতাড়িত করেছে ভারত সরকার। দানিশ সম্পর্ক তদন্ত করতে গিয়েই প্রথমে জ্যোতির নাম পান তদন্তকারীরা। এই দানিশেরই ‘বিশেষ আমন্ত্রণে’ গত বছর পাক দূতাবাসে ইফতার পার্টিতে যায় জ্যোতি। এবং পুরো বিষয়টির ভিডিও করে সে। সেই ভিডিও দেখেই সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের।
আরও পড়ুন- Asaduddin Owaisi: ‘আমি পাকিস্তানের জামাইবাবু!’ ইসলামাবাদের ট্রোলকে পাল্টা জবাব ওয়েইসির