ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এপার বাংলা ও ওপর বাংলার মানুষের কাছে (Taslima Nasrin) নিজের সাহিত্য কীর্তির জন্য ভীষণ জনপ্রিয় হলেন তসলিমা নাসরিন। তার লেখায় একাধিকবার উঠে এসেছে প্রেম, বিরহ, অপেক্ষা, নারীবাদ, প্রতিবাদের কথা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তার পোস্ট মন কাড়ে অনেক অনুরাগীর। কিন্তু এবার তিনি এমনকিছু পোস্ট করলেন যা দেখে হতবাক নেটিজেনরা।
কী লিখলেন তসলিমা? (Taslima Nasrin)
তসলিমা নাসরিন শনিবার সকালের একটি পোস্টে (Taslima Nasrin) লিখেছেন, “হয়েছে, অনেক হয়েছে। ৫০টার চেয়েও বেশি বই লিখেছি অকৃতজ্ঞ বাঙালির জন্য, যে বাঙালি আমাকে গোটা বাংলায় এক ইঞ্চি মাটি দেয়নি দাঁড়াবার। এই অকৃতজ্ঞ বাঙালি আমার নিজের দেশে আমাকে বাস করতে দেয়নি। নিরন্তর নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে আমার অস্তিত্ব।”
এখানেই শেষ নয়… (Taslima Nasrin)
তার সঙ্গে আরও লিখেছেন,”এদের জন্য ভেবে মরে গেলেও, এদের কষ্ট নিবারণ করতে চাইলেও, এদের সুখ শান্তির জন্য, এদের প্রাপ্য অধিকারের জন্য দিন রাত না ঘুমিয়ে কাটালেও এদের কিছু যায় (Taslima Nasrin) আসে না। এরা আমকে গালি দেবেই, এরা আমাকে অপমান অপদস্থ করবেই, এরা আমাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেই, অবজ্ঞা করবেই, উপেক্ষা করবেই। দেখা হলো তো ৩০ বছর! এখন থেকে, যতদিন বাঁচি, বই পড়বো, গান শুনবো, নাটক সিনেমা দেখবো, ভ্রমণ করবো, আর আকাশ দেখবো।”
আশঙ্কিত নেটিজেনরা
এই লেখা প্রকাশ্যে আসার পরেই অনেকে ভাবছেন, তবে কি লেখালিখি ছাড়ছেন তসলিমা? (Taslima Nasrin) এক নেটিজেন লিখেছেন, “আমরা আপনার লেখা পড়েই বড় হয়েছি। প্রতিবাদের ভাষা শিখেছি। দয়া করে এমন সিদ্ধান্ত নেবেন না।” আরেকজন লিখেছেন, “বাঙালির মধ্যেও আমরাও আছি যারা আপনার লেখা পড়তে ভালোবাসি। অযথা চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাবেন না।”
খোলা চিঠি
আব্দুল্লাহ নামক এক ব্যক্তির খোলা চিঠি নিজেই পোস্ট করেছেন তসলিমা। সেখানে লেখা, ‘আপনার লেখা চালিয়ে যাওয়া জরুরি। কেন জানেন? আজ থেকে প্রায় ২৬ বছর আগে ঢাকার হাজারীবাগের নবীপুর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান আপনার বিরুদ্ধে মিছিলে যেতেন ঠিকই, কিন্তু তিনি আপনার বই পড়তেন। সেই বই তাঁর পুত্র আব্দুল্লাহ আল মাসুদও পড়েছে। আপনার সেই বইয়ের এতটাই প্রভাব যে, মাদ্রাসার ধারাবাহিক ব্রেইনওয়াশ, সমাজের মুসলিমদের হুমকি, জঙ্গিদের কতল করার হুমকি ইত্যাদি কোন কিছুই আমাকে সত্য উচ্চারণ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।”
বিতর্কের শেষ নেই
বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত তসলিমা আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। তারপর চলে আসেন ভারতবর্ষের রাজধানী দিল্লিতে। পশ্চিমবঙ্গেও নিষিদ্ধ তিনি। তাকে পরিষ্কারভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে যে, ভারতবর্ষের যেখানে খুশি তিনি যেতে পারেন, কিন্তু বাংলায় তিনি আসতে পারবেন না। বাম জমানায় তাকে নিষিদ্ধ করা হলেও তৃণমূল সরকার ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরেও কোনওরকম পরিবর্তন হয়নি।
আরও পড়ুন: Saif Ali Khan: সইফের দুঃসময়ের সারথি অটোচালক, এক রাতেই হলেন ফেমাস
সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন তসলিমা। সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়েও মুখ খুলেছিলেন তিনি। বিতর্কিত হওয়া সত্বেও এতদিন থেমে যাননি তিনি। এবার যদি তিনি এহেন সিদ্ধান্ত নেন, তবে বাঙালি পাঠককূলের মননে আঘাত লাগবেই বটে।