ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: একসময় বলিউডকে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলা (Tollywood Industry)। গোটা দেশের কাছে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছিল গর্বের বিষয়। সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে এসেছে ভারতের প্রথম অস্কার। ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, তপন সিনহা, বিমল রায়, ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায়, শক্তি সামন্তদের মতো কিংবদন্তিরা বাংলা সিনেমাকে পৌঁছে দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দরজায়।
ইন্ডাস্ট্রি হারাচ্ছে পরিচয় (Tollywood Industry)
কিন্তু আজ সেই ইন্ডাস্ট্রি (Tollywood industry) কি হারিয়ে ফেলছে নিজের পরিচয়? প্রশ্ন উঠছে চারদিক থেকে। টালিগঞ্জের অন্দরের ছবি শুনলে শিউরে উঠতে হয়—চলচিত্রের জগৎ নাকি হয়ে উঠেছে ষোড়শ লুইয়ের প্যারিস বা হিটলারের বার্লিন! শিল্পীর স্বাধীনতা নেই, চলছে ‘ডিক্টেটরশিপ’।
মাফিয়া রাজ্যের অভিযোগ (Tollywood industry)
অভিযোগ—একপ্রকার মাফিয়ারাজ চলছে ইন্ডাস্ট্রিতে (Tollywood industry), যার চালকের আসনে রয়েছে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী, যাঁরা ফেডারেশনের নাম ভাঙিয়ে পরিচালনা করছে গোটা ব্যবস্থাকে।চলচ্চিত্র নির্মাণে বাধা, কাটমানি, তোলাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন—এইসবের মধ্যেই দমবন্ধ হয়ে পড়েছেন কলাকুশলীরা।
মুখ খুলছেন অনেকেই
একাধিক পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা, এমনকি টেকনিশিয়ানও মুখ খুলেছেন—কেউ প্রকাশ্যে, কেউ আবার ক্যামেরার আড়ালে, নিরাপত্তার ভয়ে।পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে টলিউডের এই ধসের চিত্র-২০২৩ সালে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ছোট-বড় মিলিয়ে মুক্তি পেয়েছিল ১৩৪টি সিনেমা। ২০২৪ সালে, সেই সংখ্যা কমে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪০-এ। এক বছরে প্রায় ৭০% হ্রাস। কেন এই পতন?
শিল্পীদের দাবি
শিল্পীদের একাংশের দাবি, ফেডারেশনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম না মানলে বর্তমানে কোনও বড় প্রজেক্ট টলিউডে শুরু করা যাচ্ছে না। একসময় যেখানে বাংলা তার নিজস্ব কনটেন্টে দেশ-বিদেশ মাতাতো, সেখানে এখন দক্ষিণ ভারত বা মুম্বইয়ের প্রজেক্টও কলকাতাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। ‘পুষ্পা’র মতো বিখ্যাত ফিল্মও কলকাতায় রেকি করেও শেষমেশ শ্যুট করেনি।
বেঁধে দেওয়া নিয়ম
ফেডারেশনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনে কাজ করতে হচ্ছে পরিচালকদেরও।এমনকি ফেডারেশনের ঠিক করে দেওয়া টেকনিশিয়ানদের নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। ফলে পরিচালকদের কাজের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রতা বিঘ্নিত হচ্ছে। কাজের মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সহজেই ক্ষতির মুখ দেখছেন প্রডিউসাররা।
আরও পড়ুন: Biswase Obiswas: সেই গৌরব কেন হারাতে বসেছে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি? উঠছে প্রশ্ন!
অচলাবস্থা
টলিউডে এখন একপ্রকার অচলাবস্থা। গিল্ড বনাম ফেডারেশনের সংঘাত, অলিখিত নিষেধাজ্ঞা, ব্যান-লিস্ট, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে থমকে আছে একাধিক প্রজেক্ট। অভিযোগ উঠছে—যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, শুটিং বাতিল হচ্ছে, আর নাম তোলা হচ্ছে নিষিদ্ধ তালিকায়।
আলোর মুখ দেখাবে কে?
এখন প্রশ্ন একটাই—এই অন্ধকার টলিউডকে কে আলোর মুখ দেখাবে? আর কতদিন শিল্পের নামে চলবে এই দাদাগিরি?