Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর সমুদ্রসৈকত হিসেবে শীর্ষস্থান দখল করেছে ইন্দোনেশিয়ার পিংক বিচ (Travel)। সাম্প্রতিক সময়ে ভ্রমণবিষয়ক দুটি বড় সংস্থা—‘ফোর্বস’ এবং ‘এক্সপ্লোর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড’-এর জরিপে একে সেরা বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কোমোডো দ্বীপে অবস্থিত এই সৈকত প্রকৃতির এক বিস্ময়। চারপাশে প্রবালবাগান, উজ্জ্বল রঙের রিফ ফিশ, আর পানির নিচে নৃত্যরত সি-স্টার মিলে সৃষ্টি করেছে যেন এক জীবন্ত রূপকথার জগৎ। স্বচ্ছ নীল পানিতে সূর্যের আলো পড়লে সেই সৌন্দর্য হয়ে ওঠে আরও মোহনীয়।

পিংক বিচ কেন বিশেষ! (Travel)
এই সৈকতের সবচেয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো গোলাপি রঙের বালি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখানে জমে থাকা লাল প্রবালের গুঁড়ো আর ফ্লোরামিনিফেরা নামের একধরনের অণুজীবের কারণে বালি গোলাপি আভা ধারণ করেছে। এটি পৃথিবীর হাতে গোনা কয়েকটি পিংক বালির সৈকতের একটি। এখানে স্নরকেলিং করলে রঙিন রিফ ফিশ ও প্রবালের বাগান কাছ থেকে দেখা যায়। মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক ও রৌদ্রোজ্জ্বল থাকে, তাই এ সময় ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। অন্য সময় বর্ষার কারণে সৈকত ভিজে থাকে, কিন্তু তখনও ভিড় কম থাকায় প্রকৃতির নির্জন সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

দ্বিতীয় স্থানে মরিশাসের লে মর্ন (Travel)
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে লে মর্ন বিচ, যা মরিশাস দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এখানে শুধু সৈকতের সৌন্দর্য নয়, রয়েছে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের ছাপ। ৫৩৬ মিটার উঁচু এক বিশাল বেসাল্টিক মনোলিথ পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে দ্বীপটির পেছনে। ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে, কারণ ১৮ ও ১৯ শতকে এখানেই দাসপ্রথার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের করুণ স্মৃতি জড়িত।
লে মর্ন সৈকতে দাঁড়িয়ে চোখে পড়বে নারকেল গাছের সারি, মসৃণ বালু আর রঙিন মাছের খেলা। যারা স্নরকেলিং করেন, তারা কাছ থেকেই দেখতে পাবেন বিখ্যাত আন্ডারওয়াটার ওয়াটারফল—এক ধরনের অপটিক্যাল ইলিউশন, যেখানে মনে হয় সমুদ্রের বালি যেন গভীর পানির দিকে ধাবিত হচ্ছে। মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মরিশাসে থাকে শীতল ও শুষ্ক আবহাওয়া, যা ভ্রমণের সেরা সময়।

তৃতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকার বোল্ডার্স বিচ (Travel)
তৃতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বোল্ডার্স বিচ। কেপ পেনিনসুলার কোলে অবস্থিত এই সৈকতের বড় আকর্ষণ হলো আফ্রিকান পেঙ্গুইন। দানাদার সাদা বালি, পান্না রঙের পানি আর চারদিকে বিশাল গ্রানাইট পাথর ঘেরা এই জায়গাটি যেন প্রকৃতির এক অমূল্য রত্ন। কাঠের পথ ধরে হাঁটলে দেখা যাবে পেঙ্গুইনদের দল, যারা ঘাসের ঝোপ আর পাথরের ফাঁকে খেলা করে বেড়ায়।
শুধু পেঙ্গুইন নয়, এখানে আরও দেখা যায় ড্যাসি নামের ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী ও কেপ করমোরান্ট পাখি। নভেম্বর থেকে মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকায় গ্রীষ্মকাল, এ সময় উজ্জ্বল রোদে পেঙ্গুইনদের চলাফেরা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। তবে জুন থেকে আগস্টে শীত ও বৃষ্টির কারণে ভিন্ন এক আবহ পাওয়া যায়।

তালিকার চতুর্থ স্থানেচীনের ইয়ালং বে (Travel)
চতুর্থ স্থানে রয়েছে চীনের বিখ্যাত ইয়ালং বে, যা ‘চীনের হাওয়াই’ নামেই বেশি পরিচিত। হাইনান দ্বীপের দক্ষিণ উপকূলে ড্রাগনের হাসির মতো বাঁকানো এই সৈকতের বালু আইভরির মতো সাদা। সেই বালু ঢালু হয়ে নেমে গেছে পান্না রঙের সাগরে।
এখানে স্নরকেলিং করলে দেখা যায় বাটারফ্লাই ফিশ ও সামুদ্রিক কচ্ছপ। সৈকতের চারপাশে সাজানো রিসোর্ট, নারকেলগাছের বাগান আর পাহাড়ের দিকে ওঠা পথ ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্ট করে। বন ঢাকা পাহাড়ে ঝুলন্ত কাচের সেতু থেকে দৃশ্য দেখা এক অনন্য অভিজ্ঞতা। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আবহাওয়া শীতল থাকে, তাই এ সময় ভ্রমণের আদর্শ মৌসুম। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে মাঝে মাঝে টাইফুনের ঝুঁকি থাকে।
তালিকার পঞ্চম থাইল্যান্ডের সানরাইজ বিচ (Travel)
পঞ্চম স্থানে আছে থাইল্যান্ডের সানরাইজ বিচ, যা কোহ লিপ দ্বীপের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। এর নামের মতোই এখানে ভোরের আলো যেন জাদুর মতো ছড়িয়ে পড়ে সোনালি বালুতে। সৈকতের পাশে ছোট ছোট ক্যাফে থেকে পাওয়া যায় স্থানীয় খাবার, যেমন টাটকা ম্যাঙ্গো স্মুদি বা গ্রিল করা টাইগার প্রনস।

আরও পড়ুন : Shah Rukh Khan: ‘কিং’ লুকে কিং খান! ধূসর চুলে হতবাক দর্শক
সানরাইজ বিচে স্নরকেলিং করলে দেখা যায় ডোরা কাটা অ্যাঞ্জেলফিশ ও ঝলমলে প্যারট ফিশ। দুপুরে ভাটার সময় লুকানো বালুচর বেরিয়ে আসে, যেখানে হাঁটতে হাঁটতে মনে হবে আকাশ আর সমুদ্র এক হয়ে গেছে। নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়, তবে বর্ষাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় বোট সার্ভিস বন্ধ থাকে।