ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এবার চিন টক্কর দিচ্ছে আমেরিকার বায়ু সেনাকেও (USA vs China)। নৌবাহিনীর শক্তিতে প্রায় সমকক্ষ এই দুই দেশ। এবার আমেরিকার বায়ুসেনাও হালকা মনে হচ্ছে ড্রাগন বায়ুসেনার কাছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছে, যুদ্ধ বিমানের সংখ্যার নিরিখে খুব তাড়াতাড়ি আমেরিকাকেও পিছনে ফেলবে লাল ফৌজের বায়ু সেনা। চিনের বায়ু সেনা আমেরিকার থেকে প্রায় ১২ গুণ এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পেন্টাগনের কপালে চিন্তার ভাঁজ (USA vs China)
এই বছরের শুরুতেই চিনের বায়ুসেনার শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে সরকারকে সতর্ক করেছিলেন মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের একজন সেনাকর্তা (USA vs China)। এরপর থেকেই আমেরিকার প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। গত ৬ জানুয়ারি চিনের পিপলস্ লিবারেশন আর্মির বায়ুসেনার শক্তি নিয়ে আশঙ্কার কথা বলতে শোনা গিয়েছে আমেরিকার এডওয়ার্ড এয়ারফোর্স ঘাঁটির ৪১২তম টেস্ট উইংয়ের কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডগ উইকার্টের মুখে।
সেনা কর্তার আশঙ্কা (USA vs China)
তিনি একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, ”যুদ্ধ বিমানের দিক থেকে অপ্রত্যাশিত উন্নতি করেছে চিন।“ তিনি আরও দাবি করেন, কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের এলাকার লড়াকু জেট মোতায়েনের নিরিখে আমেরিকাকে পিছনে ফেলতে চলেছে চিন (USA vs China)। ২০২৭ সালের মধ্যে চিন এবং আমেরিকার যুদ্ধবিমানের সংখ্যার অনুপাত দাঁড়াবে ১২ বনাম এক।
আরও আগ্রাসী হবে ড্রাগেন
বায়ু সেনাশক্তি বৃদ্ধির পর আরও আগ্রাসী রূপ ধারণ করবে ড্রাগেন। এমনি আশঙ্কা আমেরিকার সেনা কর্তার। তিনি মনে করেন, চিন যেভাবে শক্তি বাড়াচ্ছে তাতে তাঁকে রুখে দিতে না পারলে পরে তাঁকে মোকাবিলা করা বেশ কঠিন হবে আমেরিকার জন্যও।
আরও পড়ুন: Pete Hegseth: বিতর্ক নিয়েও জয়ী! মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে অনুমোদন পেকেন পিট হেগসেথ
পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান
এ ছাড়া পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের স্বল্পতার কথাও বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওই পদস্থ বায়ুসেনা অফিসার। উইকার্টের দেওয়া তথ্য বলছে, বেজিং এবং ওয়াশিংটনের হাতে থাকা এই ধরনের লড়াকু জেটের সংখ্যার অনুপাত দাঁড়িয়েছে পাঁচ বনাম তিন। সমুদ্রে নজরদারি বিমানের ক্ষেত্রে সেটি তিন বনাম একে গিয়ে ঠেকেছে।
তাইওয়ানকে ঘিরেছে চিন
গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি মহড়ার নামে হঠাৎ করেই তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলে পিএলএর নৌসেনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় যুদ্ধাভ্যাস করেনি আর কোনও নৌবাহিনী। গত বছরের জুনে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে মহড়া চালায় আমেরিকার নৌসেনা। তাইওয়ানকে ঘিরতে সেখানে অংশ নেওয়া রণতরির তুলনায় তিন গুণ বেশি যুদ্ধজাহাজ কাজে লাগায় চিন। গত বছর ২৬ ডিসেম্বর প্রথম বার ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রকাশ্যে এনে গোটা দুনিয়াকে চমকে দেয় চিন।
আরও পড়ুন: US Aid Suspended: বিদেশি সাহায্যের তহবিল বন্ধ ট্রাম্প প্রশাসনে, শুধু ইজরায়েল ও মিশরকে ছাড়
ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান
এই আধুনিক বিমানটিকে প্রকাশ্যে আনার পর এই নিয়ে সরকারি ভাবে অবশ্য কোনও বিবৃতি দেয়নি ড্রাগন সরকার। চেয়ারম্যান মাওয়ের জন্মদিনে সিচুয়ান প্রদেশের চেংডুতে ‘ঝুহাই এয়ার শো’র আয়োজন করে চিনের পিপল্স লিবারেশন আর্মি বা পিএলএর বিমানবাহিনী। সেখানেই প্রথম বার আকাশে ওড়ে ষষ্ঠ প্রজন্মের ‘জে-৩৬’। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত লড়াকু বিমানে লেজের মতো একটি অংশ থাকে। ‘জে-৩৬’ জেটে সেটি রাখেননি বেজিংয়ের প্রতিরক্ষা গবেষকেরা।অত্যাধুনিক চিনা যুদ্ধবিমানটি তিন ইঞ্জিন বিশিষ্ট হওয়ায় পঞ্চম প্রজন্মের লড়াকু উড়ানগুলির থেকে এর গতিবেগ অনেকটাই বেশি। সূত্রের খবর, ‘জে-৩৬’ জেটে রয়েছে টার্বোফ্যান ইঞ্জিন। লেজের মতো অংশ না-থাকায় কোনও ভাবেই একে চিহ্নিত করতে পারবে না রাডার। অর্থাৎ যুদ্ধবিমানের ‘স্টেলথ’ শক্তি বাড়িয়েছে বেজিং। এ ছাড়া, এক বার জ্বালানি ভরে দীর্ঘ সময় আকাশে থাকতে পারবে ‘জে-৩৬’।