ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০১৯ সালের পর ফের ঐতিহ্যবাহী ‘পৌষমেলা’ (Poush Mela) করছে শান্তিনিকেতন (Shantiniketan) ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ, আগের মত পূর্বপল্লীর মাঠে ফিরছে একদা বন্ধ হয়ে যাওয়া মেলা। এদিন ম্যারাথন বৈঠক করে এমনই সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে, আগের মতই মেলার জন্য রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হবে৷
বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, ‘এবার পৌষমেলার (Poush Mela) যথারীতি শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট করবে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করবে৷ ২০১৯ সালের পর ২০২৪ সালে এই মেলার ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী হবে৷ তবে আগের মত রাজ্য সরকারের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হবে৷ সেই মর্মে চিঠি দেওয়া হবে৷ এটাই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হল।’

আরও পড়ুন: পাহাড়ে ভাঙল জনজাতিদের নিয়ে গঠিত সব বোর্ড, অনিত থাপাকেই নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব
আরও পড়ুন: মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে বিশ্বসেরা বাংলা, পাহাড়ের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব মমতা
‘পৌষমেলা’র (Poush Mela) শুরু কীভাবে?
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন (Shantiniketan) ট্রাস্ট৷ সেই ট্রাস্ট ডিডে উল্লেখ রয়েছে, প্রতি বছর ৭ পৌষ একটি মেলার আয়োজন করবে ট্রাস্ট। আর সমস্ত রকম সহযোগিতা করবে বিশ্বভারতী। সেই মত চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা (Poush Mela) চলে আসছে। প্রথমে পুরনো মেলার মাঠে হত এই মেলা। কালের নিয়মে মেলার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বপল্লীর মাঠে হয়ে আসছিল এই মেলা৷

‘মেলা’ বিতর্ক (Poush Mela):
২০১৯ সালে শেষবার পূর্বপল্লীর মাঠে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা করেছিল শান্তিনিকেতন (Shantiniketan) ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল মেলা। এরপর ২০২১ ও ২০২২ সালে তৎকালীন বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নানান মন্তব্য ও সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়৷ এই সংঘাতের জন্য পৌষমেলা (Poush Mela) বন্ধ করে দিয়েছিলেন উপাচার্য। সেই দুই বছর বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে একটি মেলা করেছিল রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: চুরি গেল তরুণের স্বপ্ন! পুরুলিয়াতেও গায়েব ট্যাবের টাকা, নজরে জামতাড়া গ্যাং
২০২৩ সালে পৌষমেলা (Poush Mela) করার জন্য পূর্বপল্লীর মাঠ রাজ্য সরকারকে দিয়েছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত মেলার আয়োজন করতে মাঠ রাজ্য সরকারকে দেওয়া হল? এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল৷ তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল৷
এবার, ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার আয়োজন করছে শান্তিনিকেতন (Shantiniketan) ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এদিন, বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে মেলার আয়োজন নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক হয়৷ বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেনের তত্ত্বাবধানে এই বৈঠকে স্থির হয় ২০১৯ সালের পর ২০২৪ সালে ফিরছে পৌষমেলা (Poush Mela)৷ তবে আগের মতই জল, বিদ্যুৎ, নিকাশি ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রভৃতির জন্য রাজ্য সরকারের সহযোগিতা নেবে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।