ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস(Visva Bharati University)। বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর, বর্তমানে সে দেশ টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই চলছে। বাংলাদেশের জটিল পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বভারতীর আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে উদযাপিত হল না মাতৃভাষা দিবস। এমনকী বাতিল করা হয়েছে সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। তবে মূল অনুষ্ঠান বন্ধ হয়নি। তা হয়েছে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় সংহতি কেন্দ্রে। শুক্রবার সকালে পূরবী গেট থেকে একটি শোভাযাত্রাও হয়েছে।
ভবন নির্মাণের পর থেকেই ২১ ফেব্রুয়ারি (Visva Bharati University)
২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ ভবন(Visva Bharati University) নির্মাণের পর থেকেই ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এখানেই উদযাপিত হয়ে আসছে। ব্যতিক্রম হয়নি কোনও দিনই। যদিও পূর্বে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ক্যাম্পাসে মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে মূলত ওপার বাংলার পড়ুয়ারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তাদের সাথে যোগ দেয় বিশ্বভারতীর অন্যান্য ছাত্র- ছাত্রীরাও। বাংলাদেশের ছাত্র ছাত্রীদের তত্ত্বাবধানে সকালের অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যার অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু এবছর আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে হয়নি মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান।
২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবন (Visva Bharati University)
গত ২০১৭ সালে শান্তিনিকেতনে(Visva Bharati University) পূর্বপল্লীর পিছনের মাঠে ১ লক্ষ ৪০ হাজার বর্গ ফুট জায়গাজুড়ে তৈরি হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবন ৷ বাংলাদেশ সরকারের ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল এই ভবন৷ দুই বাংলার সংহতির প্রতীক এই ভবনের নকশা নিজে হাতে তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ পরের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২৫ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: International Mother Language Day: সমগ্র বাঙালি জাতির ‘অমর একুশে’, কী ২১ ফেব্রুয়ারির ইতিহাস?
শুক্রবার সকালে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা
বিশ্বভারতীর(Visva Bharati University) জনসংযোগ আধিকারিক (ভারপ্রাপ্ত) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবছরও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে ২১ ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কো-ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করবে বিশ্বভারতী। ওইদিন সকাল সাড়ে আটটায় আন্তর্জাতিক অতিথি নিবাসের সামনে থেকে ( ‘পূরবী’ গেট) একটি সাংগীতিক পরিক্রমা পৌঁছোবে ইন্দিরা গান্ধী কেন্দ্রে। সেখানে ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। শুক্রবার সকালে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা হয়। সেখানে অংশ নেন উপাচার্য বিনয় কুমার সোরেন, অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ-সহ বিভিন্ন ভবনের পড়ুয়ারা। তার সাথে আলপনায় রাঙানো হয় ক্যাম্পাস।
বাংলাদেশ ভবন সংস্কারের কাজ
যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ ভবন সংস্কারের কাজ চলছে, তাই স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে । ওপার বাংলায় পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, এপার বাংলায় বন্ধন অটুট।অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনের সমন্বয়ক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাংলাদেশের পড়ুয়াদের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান বড় বিষয় ৷ এটা আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস ৷ এপার বা ওপার বাংলা বলে নয়, সকল ভাষাভাষী দিবস আজ । সংস্কারের কাজ চলার জন্য বাংলাদেশ ভবনে অনুষ্ঠান হয়নি ৷ পরে আবার হলে তা হবে কখনও ৷”
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: বাংলায় শুনানির মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উদযাপনে কলকাতা হাইকোর্ট
গানে গানে উদযাপিত মাতৃভাষা দিবস
প্রতি বছর বিশেষ এই দিনটি উদযাপিত হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতীতে ৷ এবারও তার অন্যথা হল না ৷ ‘মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা…’, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল…’, ‘আমি বাংলায় গান গাই…’ প্রভৃতি গানে গানে উদযাপিত হল মাতৃভাষা দিবস । অমর একুশে’ গানে গানে অংশ নিলেন বাংলাদেশের পড়ুয়ারাও (নিজস্ব চিত্র)গত 15 ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন ‘আমি বাংলায় গান গাই…’-এর স্রষ্টা প্রতুল মুখোপাধ্যায় । তাঁকেও স্মরণ করা হয় গানের মধ্য দিয়ে ৷ অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিশ্বভারতীতে পাঠরত বাংলাদেশী পড়ুয়ারাও ৷ বেদীতে পুষ্প দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেন।