ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ(SSC Scam)সংক্রান্ত বিতর্কে ফের উত্তাল রাজনীতি ও প্রশাসনিক পরিমণ্ডল। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের(এসএসসি) নিয়োগপদ্ধতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া প্যানেলের পরিপ্রেক্ষিতে এবার আরও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। ‘দাগি নন’ বা ‘অযোগ্য নন’ বলে চিহ্নিত শিক্ষকদের তালিকা থেকে নতুন করে আরও ১৮০৩ জনের নাম বাদ দিয়ে একটি সংশোধিত তালিকা পাঠানো হয়েছে জেলাগুলিতে। নতুন তালিকায় রয়েছেন ১৫,৪০৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।
‘অযোগ্য নন’ কারা?(SSC scam)
মোট ২৫,৭৩৫ জনের চাকরি বাতিল(SSC Scam) হওয়ার পর প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষকের তালিকা খতিয়ে দেখে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ ১৭,২০৬ জনকে ‘অযোগ্য নন’ বলে চিহ্নিত করে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করে। এই তালিকাভুক্ত শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত স্কুলে পাঠাতে ও তাঁদের বেতন চালু রাখতে সম্মতি দেয় শীর্ষ আদালত, যাতে পড়ুয়াদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত না ঘটে। তবে এই ১৭ হাজারের মধ্যেই আরও ত্রুটি পাওয়া যায় — বিশেষ করে ওএমআর শিট সংক্রান্ত বিভ্রান্তি ও অন্যান্য নথিগত সমস্যার কারণে। তাই আরও এক দফা যাচাইয়ের পরে বাদ পড়লেন ১৮০৩ জন।
নতুন তালিকায় কি চূড়ান্ত?(SSC Scam)
এসএসসি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নতুন ১৫,৪০৩ জনের তালিকাই আপাতত চূড়ান্ত ধরা হচ্ছে এবং আইন অনুযায়ী আগামি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি। তালিকায় থাকা-না থাকা নিয়ে চাকরি হারানো প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ চরমে। গত কয়েক দিন ধরে কলকাতার এসএসসি দফতরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছেন তাঁরা। এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে দফতরে আটকে রেখে হয়েছে ব্যাপক ধস্তাধস্তি, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটেছে।
তালিকা প্রকাশে ধোঁয়াশা!
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তালিকা প্রকাশ নিয়ে অস্পষ্টতা থেকে যাচ্ছে। তালিকা প্রকাশের নির্ধারিত সময়সীমা ২১ এপ্রিল শেষ হওয়ার পর থেকেই অসন্তোষ বেড়েছে। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এসএসসি জানিয়েছে, তারা কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছে এবং কোর্ট যাঁদের ‘অযোগ্য নন’ বলে চিহ্নিত করেছে, কেবলমাত্র তাঁরাই বেতন ও চাকরির সুবিধা পাবেন।
অব্যাহত আন্দোলন
এদিকে কলকাতা হাই কোর্টেও এই সংক্রান্ত মামলা চলমান। সেখানে হাজিরা দিতে গিয়ে দফতর থেকে ‘মুক্তি’ পান এসএসসি চেয়ারম্যান। তবে আন্দোলন এখনও অব্যাহত।
শিক্ষা ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মাফিক, ২০২৫ সালের মধ্যেই একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ নিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে সমস্ত শূন্যপদ পূরণের দায়িত্ব রাজ্যের উপর বর্তায়। এই বিতর্কের জল কতদূর গড়াবে, তা বলবে সময়ই। তবে আপাতত রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা অব্যাহত।