ট্রাইব টিভি বাংলা : শীতকালে অনেকেরই জল কম পান করার প্রবণতা দেখা যায়।গরমকালে তেষ্টা বেশি পায় ফলে জল পান (Water Intake) করা হয়। কিন্তু শীতকালে সেই সম্ভাবনা থাকে না।শীতে ঘাম প্রায় হয় না বললেই চলে। তাই শীতকালে তৃষ্ণা কমা স্বাভাবিক। তবে তার মানে এই নয় যে শরীরে জলের প্রয়োজন নেই। বরং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে শরীরে জলের ঘাটতি হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত জল পান (Water Intake) করা জরুরি। ঠিক পরিমাণে জল না খাওয়া হলে শরীরে জলের ঘাটতি হতে পারে। দেখা দিতে পারে অনেক সমস্যা।
কী কী সমস্যা হতে পারে? (Water Intake)
১)বাড়তে পারে ক্লান্তি ভাব : শীতকালে অধিকাংশের মধ্যেই আলস্য দেখা দেয়। কাজের উদ্যম কমে যায় অনেকটা। জল শরীরের ইলোক্ট্রোলাইটের অভাব পূরণ করে সতেজ ও তরতাজা করে তোলে।তাই এই ঝিম ধরা ভাব কাটাতে ঠিকমতো জল খাওয়া (Water Intake) প্রয়োজন।
২)বাড়তে পারে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা : ভিটামিন ডি-এর অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন মানুষ। শীতকালে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি বাড়ে। এছাড়াও এই সময় আবহাওয়া শুষ্ক এবং রুক্ষ থাকে। তার মধ্যে জল কম খেলে শরীরে জলের ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশন হয়। তাই শীতে পর্যাপ্ত জল না খেলে বাড়তে পারে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা।
৩)উজ্বলতা হারাবে ত্বক ও চুল : শীতকালের শুষ্ক-রুক্ষ আবহাওয়ায় চুল, ত্বক সবই শুকনো হয়ে যায়। নিজের ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়ার জন্যও শীতকালে পরিমাণ মতো জল খাওয়া উচিত। নইলে ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে ব্রন, র্যাশের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চুল রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে খুশকির সমস্যা বাড়তে পারে।
৪) হজম সংক্রান্ত সমস্যা বৃদ্ধি : দীর্ঘস্থায়ী ডিহাইড্রেশন গ্যাস্ট্রাইটিস এবং আলসারের মতো আরও গুরুতর হজম সংক্রান্ত সমস্যা বাড়তে পারে।জল কম খেলে শরীরের ভিতরে ‘টক্সিন’ জমতে শুরু করে। তার ফলে টানা অম্বলের সমস্যাতেও ভুগতে হতে পারে। আর হজম শক্তি ঠিক ভাবে কাজ না করলে এর প্রভাবে একধাক্কায় বেড়ে যেতে পারে ওজনও।
৫)বাড়তে পারে অ্যালার্জি-শাসকষ্টের সমস্যা : শীতের সময়ে নানা রকম অ্যালার্জিজনিত অসুখ বেড়ে যায়, যার অন্যতম বড় কারণই হল জল কম খাওয়া।এছাড়া শীতকালে শ্বাসকষ্টের প্রকোপও খুব বাড়ে। জল শ্বাসকষ্ট কমাতে এবং শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে জল।তাই অ্যালার্জি বা শাসকষ্টের সমস্যা থাকলে পর্যাপ্ত জল পানের দিকে নজর দিন।
আরও পড়ুন : চিনি বেশিতেও বিপদ, কমেও বিপদ, জেনে নিন কতটা খাবেন চিনি
কতটা জল পান প্রয়োজন? (Water Intake)
কার কতটা জল পান (Water Intake) করা উচিত তার কোনও সুপারিশ নেই। সাধারণভাবে, বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন কমপক্ষে ছয় থেকে আট গ্লাস জল পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ন্যাশনাল একাডেমি ফর সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিন ইউএস পুরুষদের ৩.৭ লিটার ও মহিলাদের ২.৭ লিটার জল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তবে কে কেমন কাজ করেন, কার শারীরিক পরিশ্রম কতটা, কোন জায়গায় বাস করছেন ইত্যাদি বিষয়গুলিও এক্ষেত্রে বিচার্য।
আরও পড়ুন : ৩০ মিনিটের বদলে ভাগে ভাগে ৩০ সেকেন্ড হাঁটলেও উপকার, বলছেন গবেষকেরা
সতর্কতা
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ থাকলে মেপে জলপান করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। নইলে কিডনির উপর চাপ আরও বাড়বে। ঠিক একইভাবে হার্ট ফেলিওর রোগীদেরও জল মেপে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাই কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো জলপান করুন।