আদরের সন্তানকে বুকে আগলে রাখতে চান বাবা-মা। ছোট্ট শিশুদের নিয়ে এক্ষেত্রে চিন্তাটা থাকে বেশি। ভারতে ছোট্ট শিশুদেরকে তাদের বাবা-মা থেকে আলাদা করা সহজ কাজ না। কিন্তু একটা বয়স পর গিয়ে সন্তানকে মা-বাবার বিছানায় রাখাটা সঠিক নয়। শুরু থেকে এই অভ্যেস না করলে একটা বয়স পর বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। সন্তানকে কত বছর বয়সে আলাদা ঘর দেবেন? মা-বাবার সাথে শিশুর বিছানা কত বয়স অবধি রাখা যায়?
পরিবার পরিকল্পনা অনুযায়ী এর রীতিনীতি আলাদা হলেও অনেক মা-বাবা জানেন না আসল কারণ গুলো। অনেক সময় দেখা যায় ৭-৮ বছর বয়সেও সন্তান সঙ্গে নিয়ে এক বিছানায় থাকছেন বাবা-মা। যৌথ পরিবারগুলোতে চাইলেও এই নিয়ম পালন করা যায় না। কিন্তু নিউক্লিয়ার পরিবার বেশি হওয়ায় দরুন অনেক অভিভাবকরা চান তাদের সন্তান সঠিক বয়সে স্বাবলম্বী হয়ে উঠুক। সেজন্য কিছু বিষয় সম্পর্কে পিতা মাতাদের সজাগ থাকতে হবে।
শিশুরা কান্না করলে বাবা-মা ভাবেন, রাতে একসঙ্গে ঘুমলে বাচ্ছার ঘুম ভালো হবে। হয়তো তারা রাতে ভয় পাবে না। জেগে গিয়ে কাঁদবে না। এই ধারনা একদম ভুল। গবেষকরা বলছেন বাচ্ছা ছোটো থেকে একা ঘুমোনোর অভ্যেস করলে তার মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। এরফলে তাদের সারাদিন এর ক্লান্তি কেটে যায়। ১৮ মাস হওয়ার পর বিছানা আলাদা করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বাবা মার সঙ্গে এক বিছানায় ঘুমোতে দেওয়া হলে তাদের ঘুমের পরিমান কমে আসে। সারাদিন তাদের আচরণের মধ্যে বিরক্তি লক্ষ্য করা যায়। দিনের বেলায় তারা অস্বস্তিতে থাকে।
আরও পড়ুন: Dog Cry: কুকুরের কান্নাই কী আসলে কুকুরের ডাক! মাঝরাতেই তারা টের পায় অশরীরী আত্মার?
তাই একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর সন্তানের বিছানা আলাদা করে দিন। ভবিষ্যতে আপনার সন্তান যাতে আলাদা ঘুমাতে ভয় না পায় এবং সে যাতে মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠে, তার ব্যবস্থা এখন থেকে শুরু করুন। ৫-৬ বছর হলে সন্তানকে আলাদা রুম দিন। দেখলেন সন্তান এক ঘুমতে গিয়ে জেগে যাচ্ছে। আপনাদের কাছে চলে আসছে। তাহলেও তাকে সাহস দিন। উৎসাহ প্রদান করুন আলাদা ঘরে ঘুমোনোর। আন্তর্জাতিক এক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে এক তৃতীয়াংশ শিশু যাদের ৬ মাস বয়স থেকে রাতে বার বার জেগে যাওয়ার অভ্যেস ছিল। সেই অভ্যেস তাদের ১৮ মাস অবধি রয়ে গেছে। তাই ২ বছর বয়সের আগে এই অভ্যেস তৈরী না হলে মা-বাবার ঝক্কি বেশি পোহাতে হয়। এজন্য প্রথমে আপনার সন্তানের জন্য পছন্দের ঘর দিন।
আরও পড়ুন: Money Plant: বাড়িতে মানি প্ল্যান্ট রেখেছেন! পরখ করে নিয়েছেন তো!
শিশুরা যেখানে দিনের বেশিদিন কাটাবে সেখানে তারা ঘুমতে চাইবে। সন্তানের ঘরটি সাজান রংবেরঙের আসবাবপত্র দিয়ে। সঙ্গে রাখুন নানান খেলনা,সফট টয়েস। খেয়াল রাখুন আপনার বাচ্চাটি কোন জিনিস নিয়ে সারাদিন কাটাতে বেশি পছন্দ করছে। পছন্দের তালিকা সেট করে ঘরে নিয়ে আসুন পছন্দের খেলনা। খাটের উচ্চতা রাখুন শিশুদের উপযোগী করে। রাতে ঘরের মধ্যে মৃদু আলো জ্বেলে রাখুন। রুমের দরজা খোলা রাখুন। যদি সন্তান ভয় পেয়ে জেগে ওঠে আপনি যেমন কাছে আসতে পারেন সজাগ থাকুন। দেখবেন সন্তানেরর জন্য বাড়তি চিন্তা থাকবে না।