ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ক্যাথরিন একজন গুপ্তচর হিসেবে মোসাদের জন্য কাজ করত বলে জানা গেছে (Woman journalist spy in Iran)। তিনি ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনুপ্রবেশ করেছিলেন এবং ইjরায়েলের অভিযান সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলেও জানা গেছে।
ইজরায়েলের মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি, তিনজনের ফাঁসি (Woman journalist spy in Iran)
ইজরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যেই, ইরান এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে (Woman journalist spy in Iran)। সম্প্রতি তিনজন পুরুষকে মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে চলতে থাকা গোপন লড়াইয়ের নতুন মাত্রা। পাশাপাশি, ইরান সরকার এখন মোসাদ-যোগ রয়েছে এমন সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। জনসাধারণকে সচেতন করা হচ্ছে, সন্দেহজনক কোনও আচরণ দেখলেই যেন সরকারকে জানানো হয়।
গোপন অভিযানে ঢুকে পড়েছিল মোসাদ, উদ্বেগে ইরান (Woman journalist spy in Iran)
ইরানের কেন্দ্রস্থলে মোসাদ এজেন্টরা সফলভাবে ঢুকে পড়েছিল এবং সেখান থেকে সঠিক লক্ষ্যে অস্ত্র পাচার করেছিল (Woman journalist spy in Iran)। এমনকি তেহরানের কাছে একটি ড্রোন ঘাঁটি গড়ার পরিকল্পনাও ছিল। এই ঘটনার পর থেকেই ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। তদন্তে উঠে এসেছে এক নারীর নাম—তাঁর পরিচয় এখন দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
কে এই ক্যাথরিন পেরেজ-শাকদাম?
ক্যাথরিন পেরেজ-শাকদাম একজন ফরাসি সাংবাদিক ও বিশ্লেষক। তিনি দুই বছর আগে গোপনে ইরানে প্রবেশ করেন এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ের মধ্যে নিজেকে ঢুকিয়ে নেন। তিনি কার্যত ইজরায়েলের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করে দেশটির একাধিক গোপন তথ্য তুলে দেন বলে অভিযোগ উঠছে। প্রশ্ন উঠেছে—ইরানের মতো কড়া নিরাপত্তার দেশে কীভাবে তিনি এতদূর পৌঁছতে পারলেন?
ফ্রান্স থেকে ইরান: এক গুপ্তচরের কাহিনি
ক্যাথরিন একটি ধর্মনিরপেক্ষ ইহুদি পরিবারে জন্মেছিলেন ফ্রান্সে। পরে লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তাঁর সঙ্গে এক ইয়েমেনি মুসলিম পুরুষের পরিচয় হয় এবং বিয়ে হয়। ২০১৪ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তিনি শুধু প্রশিক্ষিতই ছিলেন না, বরং স্মার্ট, আকর্ষণীয় ও সাহসীও ছিলেন—এই গুণগুলো দিয়েই ইরানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে তিনি ধোঁকা দিতে সক্ষম হন।
২০১৭ সালে রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টিভি চ্যানেল RT-তে সাংবাদিকতা করতে গিয়েই তাঁর ইরানের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। এমনকি তিনি আয়াতোল্লাহ খামেনির সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন, কুদস ফোর্সের কমান্ডার সোলাইমানি এবং প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গেও দেখা করেছেন। খবর আছে, তিনি খামেনির নিজস্ব ওয়েবসাইটের লেখিকা হিসেবেও কাজ করেছেন। পরে তাঁর ইজরায়েল সংযোগ প্রকাশ্যে আসতেই খামেনির তরফে তাঁর সমস্ত লেখা সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা হয়।
IRGC-এর ভেতরে ঢুকে তথ্য পাচার
ক্যাথরিন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড (IRGC)-এর ভেতরে ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য সংগ্রহ করেন এবং সেগুলো ইজরায়েলি বাহিনীর কাছে পৌঁছে দেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ইজরায়েল ইরানের কমান্ডার, ঘাঁটি এবং বিজ্ঞানীদের উপর সফল হামলা চালায়।
The Times of Israel জানায়, ক্যাথরিন পরে ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরানের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন এবং ব্রিটেনকে অনুরোধ করেন IRGC-কে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করতে। তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ইয়েমেন বিষয়ক পরামর্শদাতা হিসেবেও কাজ করেছেন। ইসলামিক জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ এবং ইহুদিবিদ্বেষ বিষয়েও তাঁর গবেষণা রয়েছে।
এই ঘটনাগুলো ইরানে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। ক্যাথরিনের মতো একজন বিদেশির পক্ষে এমন গভীরে ঢুকে পড়া শুধু ইরান নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই অশনি সঙ্কেত।