ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ক্যান্সার, এই নামটি শুনলেই (World Cancer Day) আমাদের অনেকের মনে এক ধরনের ভীতি কাজ করে। এই মারণ রোগের প্রকোপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট (WHO) অনুযায়ী, ২০২০ সালে প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ক্যান্সারের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে, যার মধ্যে স্তন ক্যান্সার, লাং ক্যান্সার, কোলোরেকটাল ক্যান্সার, এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার হল অন্যতম। এসব ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বন করা ভীষণ জরুরি।
ক্যান্সারের কারণ (World Cancer Day)
ক্যান্সারের মূল কারণগুলোর মধ্যে (World Cancer Day) পরিবেশগত, জীবনযাত্রার অভ্যাস এবং জেনেটিক কারণ অন্তর্ভুক্ত। ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক অনক্রিয়তা, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, এবং দীর্ঘস্থায়ী সূর্যের তেজস্ক্রিয়তা একাধিক ক্যান্সারের জন্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিনের খাদ্যে বেশি চর্বি, চিনিযুক্ত খাবার এবং প্রসেসড খাদ্যের অভ্যাস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রতিরোধের উপায় (World Cancer Day)
ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য (World Cancer Day) আমাদের জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। প্রথমত, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ফলে, সবুজ সবজি, ফলমূল, সমৃদ্ধ শস্য এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
সচল রাখুন শরীর (World Cancer Day)
শারীরিক কার্যকলাপ একটি অপরিহার্য অংশ। নিয়মিত ব্যায়াম এবং শারীরিক ব্যায়াম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যেমন, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিটের মিডিয়াম শারীরিক ব্যায়াম বা ৭৫ মিনিটের হেভি শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে।
আরও পড়ুন: Brain Exercises Tips: মনযোগের সঙ্গে বুদ্ধিও হবে জোরদার, অবসর সময়েই করুন ব্রেনের ব্যায়াম!
ধূমপান, অ্যালকোহল ‘না’
ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন কমানো বা ত্যাগ করা ক্যান্সার প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, অধিকাংশ ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ধূমপান একটি প্রধান ঝুঁকির কারণ। তাই ধূমপান ছাড়ার জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও সাহায্য কেন্দ্রের সুবিধা গ্রহণ করা উচিত।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
ক্যান্সারের প্রতিরোধে একটি অপরিহার্য পদক্ষেপ হলো নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং। স্তন ক্যান্সারের জন্য মাসিক স্তন স্ব-পরীক্ষা, কলোরেকটাল ক্যান্সারের জন্য উপযুক্ত বয়সে স্ক্রিনিং এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের জন্য উপযুক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ৪০ বছরের পর থেকে এসব পরীক্ষা করা জরুরি, কারণ এই বয়সে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে।
দরকার সচেতনতা
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। স্কুল, কলেজ এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানে ক্যান্সার সচেতনতা কর্মসূচি চালানোর মাধ্যমে জনগণের মধ্যে শিক্ষা ও তথ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব। ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। পরিবার ও বন্ধুরা একে অপরকে সচেতন করে তুললে এর প্রভাব আরও বাড়বে।
রোগীকে মানসিক সমর্থন
ক্যান্সার রোগীদের মানসিক সমর্থনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সার আক্রান্ত হলে শুধুমাত্র শারীরিক চিকিৎসা নয়, মানসিক সমর্থনও প্রয়োজন। রোগীর পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের সমর্থন রোগীর মনোবল বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। তাই, রোগীর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং তাদের অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয় সম্ভব
ক্যান্সার একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও, সচেতনতা, প্রতিরোধ ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটি মোকাবেলা করা সম্ভব। আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সচেতনতা ও সহযোগিতাই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয়লাভের পথ তৈরি করবে। একসঙ্গে কাজ করে আমরা ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং ক্যান্সার আক্রান্তদের চিকিৎসায় সাফল্য অর্জন করতে পারি।