ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শনিবার থেকে হুগলির ডানকুনিতে শুরু হয়েছে সিপিএমের(CPIM) রাজ্য সম্মেলন। আজ তার শেষ দিন। ২৭তম সিপিআইএম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলন থেকে পুনরায় রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হলেন মহম্মদ সেলিম। ২০২২ সাল থেকে ওই পদে রয়েছেন সেলিম। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি দলের রাজ্য সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলেন। পাশাপাশি ৮০ জনের রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে ১৪ জন মহিলা। বাদ গেল অনেকেই।
১৪ জন মহিলা সদস্য (CPIM)
গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে এই সম্মেলন(CPIM) শেষ হবে মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি। এই সম্মেলনে সিপিএম-এর ৮০ জন সদস্যের যে নতুন রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে রয়েছেন দলের ১৪ জন মহিলা সদস্য। তালিকায় রয়েছেন দেবলীনা হেমব্রম, রমা বিশ্বাস, রূপা বাগচি, গার্গী চ্যাটার্জি, বিলাসীবালা সহিস, কণিনিকা ঘোষ, মধুজা সেন রায়, শ্যামলী প্রধান, মীনাক্ষী মুখার্জি, আত্রেয়ী গুহ, শেখ হাসিনা, গীতা হাঁসদা, জাহানারা খান ও কেনিজ রবিউল ফতিমা (আলেয়া)।
ছেঁটে ফেলা হল সুশান্ত ঘোষকে (CPIM)
নতুন কমিটি(CPIM) থেকে বেশ কয়েকজন বাদ পড়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। এর আগে সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল আলিমুদ্দিনে। কিন্তু এবার তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ্য কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলা হল। সুশান্তর বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগ উঠেছিল। যে কারণে আগেও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক পদ থেকে আগেই বাদ পড়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ। এবার রাজ্য কমিটি থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে। সুশান্তর পরিবর্তে রাজ্য কমিটিতে নিয়ে আসা হল পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক বিজয় পালকে।
আরও পড়ুন: Mohammad Salim: ২৭ তম রাজ্য সম্মেলনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি মহম্মদ সেলিমের
বয়সজনিত কারণে বাদ পড়লেন কারা?
বয়সজনিত কারণেও রাজ্য কমিটি থেকে এবারে কয়েকজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, দার্জিলিংয়ের অশোক ভট্টাচার্য ও জীবেশ সরকার। তাদের জায়গায় এসেছেন গৌতম ঘোষ। বাঁকুড়ার বর্ষীয়ান নেতা অমিয় পাত্র ও বিকাশ ভট্টাচার্যকেও রাজ্য কমিটি থেকে বয়সজনিত কারণে সরতে হয়েছে। সিপিএম-এর দলীয় নীতি অনুযায়ী, ৭২ বছরের বেশি বয়স হলে রাজ্য কমিটিতে থাকা যায় না। শোনা যাচ্ছিল এবার রাজ্য কমিটিতে থাকতে পারেন কলতান দাশগুপ্ত। কিন্তু তাঁকে রাখা হয়নি। মনে করা হচ্ছে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে আন্দোলনের সময় কলতানের গ্রেফতারিতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছিল। সেই কারণে হয়তো রাজ্য কমিটিতে রাখা হয়নি তাঁকে।

রাজ্য কমিটিতে তরুণ নেতৃত্বরাও
এবারের ৮০ জনের কমিটিতে(CPIM) রয়েছেন ১১ জন নতুন মুখ। রাজ্য কমিটিতে যেমন আছেন সুজন চক্রবর্তী, রামচন্দ্র ডোম, শমীক লাহিড়ি, নীরঞ্জন সিহি, সমন পাঠক, মৃণাল চক্রবর্তী, পুলিন বিহারী বাস্কে, অনাদী সাহু, তাপস সিনহা, গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জির মত অভিজ্ঞ নেতারা, তেমন রয়েছেন শতরূপ ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্য, প্রতীক উর রহমন, মীনাক্ষী মুখার্জি, ইন্দ্রজিৎ ঘোষের মতো তরুণ নেতৃত্বরাও। শ্রমিক ফ্রন্ট থেকে রাজ্য কমিটিতে এলেন ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার সম্পাদক রাজ্য কমিটির সদস্য় ছিলেন না, তাঁকে নেওয়া হয়েছে দলে।
প্রজেক্ট মিশন মোড
শনিবার বেলা ১২টায় সূচনা হয় সিপিএম-এর রাজ্য সম্মেলনের। প্রায় সাড়ে পাঁচশো প্রতিনিধি সারা রাজ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন। সোমবারই সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক সেলিমের মুখে প্রজেক্ট মিশন মোডের কথা শোনা যায়। এর অর্থ হল, কোনও কিছু শুরু করলে তা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। আনিস খানের মৃত্যু থেকে শুরু করে আরজি-কর। এই সব ঘটনাতেই সিপিএম আন্দোলন শুরু করলেও সেগুলো শেষ করতে পারেনি। সেই কথায় তুলেছিলেন তিনি। এবং এই বিষয়ে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে আহ্বান করেছেন সেলিম।