ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বইমেলা, বস্ত্রমেলা কিংবা খাদ্যমেলা নয়! বিভিন্ন ভাষার ক্ষমতায়ন ও স্বীকৃতির লক্ষ্যে নিউ টাউন রবীন্দ্র তীর্থ অডিটোরিয়ামে এবছরও আয়োজিত হল ভাষা মেলা, ২০২৪ (Bhasha Mela)। মানুষের জীবনে ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন ভাষার ক্ষমতায়ন ও স্বীকৃতির লক্ষ্যে হয়ে চলছে ভাষা মেলা, ২০২৪।
নিউটাউনের রবীন্দ্র তীর্থতে ভাষা মেলা (Bhasha Mela)
বৃহস্পতিবার নিউটাউনের রবীন্দ্র তীর্থতে শুরু হয়েছে ভাষা মেলা (Bhasha Mela)।পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রতিষ্ঠ ইনস্টিটিউট অফ ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের সহযোগিতায় আয়োজিত হল এই ভাষা মেলা। দু’দিনের এই ভাষা মেলার সূচনা হয়েছে বৃহস্পতিবার। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্টরা। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভাষার স্বীকৃতি (Bhasha Mela)
এই ভাষা মেলা সর্বজনীন। বাংলা ভাষার পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য ভাষাও যাতে যথাযোগ্য মর্যাদা পায় সেই উদ্দেশ্যেই এই ভাষা মেলা (Bhasha Mela)। ভাষা বিশেষজ্ঞ, গবেষক, শিল্পী, সংস্কৃতি কর্মীর পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষও এই মেলায় উপস্থিত ছিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভাষার বিশেষ সেমিনার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভাষা মেলা অনুষ্ঠিত হল। ভূমিজ, রাজবংশী, মেচ, তামাং-সহ বিভিন্ন ভাষা ভিত্তিক মানুষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে এই মেলায়।
আরও পড়ুন: মানুষের সেবাই লক্ষ্য, কলকাতায় চালু অল ইন্ডিয়া আর্য মহাসভা
ভাষার গুরুত্ব
একে অপরের ভাষার সাথে যোগাযোগ তৈরি করা সমাজে বাস করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। ভাষার মাধ্যমেই মানুষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখে। অ্যারিস্টটলের মতো, মহান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং দার্শনিক, যথাযথভাবে সংক্ষেপে বলেছিলেন, মানুষ একটি সামাজিক প্রাণী। নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য তাকে অন্যের সহায়তা প্রয়োজন। এ জন্য ভাষাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। সমাজের উৎপত্তি হয়েছে যখন উপজাতি এবং গোষ্ঠীগুলি একত্রিত হয়েছিল। যখন বিভিন্ন উপজাতি একই ভাষায় কথা বলে বা একই ধর্মের কথা বলে, তখন তারা এক দলে আসে। তাই ভাষা সমৃদ্ধিশীল সমাজের একটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এবং এটি প্রতিটি ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্ব বহন করে।
আরও পড়ুন: Kolkata News: শুক্রে শহরে ফের অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই ২০০-রও বেশি ঝুপড়ি
ভাষা মেলার উদ্দেশ্য
ভাষা মেলার প্রধান উদ্দেশ্য হল-নতুন ভাষা শেখা, ভাষার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন,ভাষার মাধ্যমে আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগ। ভাষাই একমাত্র মাধ্যম, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি। এই ভাষা হতে পারে নানাবিধ। শরীরি অথবা ইঙ্গিতের ভাষা। এ সমস্ত ধারণাই মূলত স্পষ্ট করবে এই ভাষামেলা।দেশ ও জাতির উন্নতিতে সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। কোনও জাতির সামাজিক, অর্থনৈতিক বা ঐতিহাসিক পটভূমি তার নিজ মাতৃভাষার মাধ্যমেই প্রতিফলিত হয়। কোনও জাতির সাংস্কৃতিক ধারণাকেও আমরাও তার মাতৃভাষার মাধ্যমে অনুধাবন করতে পারি। একটি শিশুও তার মাতৃভাষাতেই প্রথম কথা বলতে শেখে। আবার, মনের ভাব সহজেই প্রকাশ করা যায় মাতৃভাষায় কথা বলে। আমাদের নতুন প্রজন্মেরও নিজ মাতৃভাষা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা আবশ্যিক। মাতৃভাষা সম্পর্কে জ্ঞান থাকলেই নিজ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়ে ওঠে।