ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল হতে চলেছে (Birthright Citizenship)। এই আদেশের সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকায় বসবাসরত ভারতীয় দম্পতিরা দ্রুত ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং মাতৃত্বকেন্দ্রে গিয়ে প্রি-টার্ম সি-সেকশন ডেলিভারির তারিখ নির্ধারণ করছেন।
নির্দেশ দিলেন ট্রাম্প (Birthright Citizenship)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এই আদেশ অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব (Birthright Citizenship) পাওয়ার অধিকার বাতিল করা হয়েছে।
১৪তম অ্যামেন্ডমেন্টকে চ্যালেঞ্জ? (Birthright Citizenship)
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আদেশ (Birthright Citizenship) আমেরিকার সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর ঐতিহ্যবাহী ব্যাখ্যাকে চ্যালেঞ্জ করে। এই সংশোধনী অনুসারে, মার্কিন মাটিতে জন্মগ্রহণকারী যে কোনও শিশুই নাগরিকত্ব পেয়ে থাকে। তবে বিদেশি কূটনীতিকদের সন্তানরা এই নিয়মের আওতায় আসে না।
কবে থেকে হবে কার্যকর?
ট্রাম্পের এই নতুন আদেশ কার্যকর হওয়ার পর, ১৯ ফেব্রুয়ারির পরে জন্মগ্রহণকারী এমন কোনো শিশুই মার্কিন নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে না যার বাবা-মা নাগরিক নন। এমনকি পর্যটক, ছাত্র, কিংবা ওয়ার্ক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত দম্পতিদের সন্তানদেরও স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
ভারতীয়দের উপর পড়বে প্রভাব
এই আদেশ ভারতীয় অভিভাবকদের ওপর বড় প্রভাব ফেলবে। অনেক ভারতীয় অভিভাবকই এইচ-১বি এবং এল১ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন, এবং অনেকে গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ভেবেছিলেন যে, তাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব তাদের নিজস্ব অভিবাসনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
এই কারণেই অনেক ভারতীয় দম্পতি মাতৃত্বকেন্দ্রে গিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারির আগে সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য সিজার করাতে চাইছেন।
কী বলছেন তাঁরা
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মহিলা মার্চ মাসে সন্তান জন্ম দেওয়ার আশা করেছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম আমাদের সন্তান এখানেই জন্ম নেবে। আমরা ছয় বছর ধরে গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছি। আমাদের পরিবারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় ছিল এটি। আমরা এখন অনিশ্চয়তায় আতঙ্কিত।”
কী বলছে ডাক্তাররা?
টেক্সাসের একজন প্রসূতি বিশেষজ্ঞ জানান, তিনি দম্পতিদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে প্রি-টার্ম ডেলিভারি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তিনি বলেন, “আমি দম্পতিদের বোঝাচ্ছি যে, সময়ের আগে সন্তান জন্ম দিলে মা ও শিশুর জন্য বড় ঝুঁকি থাকে। এতে ফুসফুসের অপরিপক্কতা, খাওয়ার সমস্যা, কম ওজন, স্নায়বিক জটিলতা এবং আরও অনেক সমস্যা হতে পারে। গত দুই দিনে আমি ১৫ থেকে ২০টি দম্পতির সঙ্গে কথা বলেছি।”
আরও পড়ুন: Sean Curran: ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের নতুন ডিরেক্টর শন কারান! জানেন তিনি কে?
নিউ জার্সির এক ডাক্তার জানান, তিনি সিজার করানোর জন্য অস্বাভাবিক সংখ্যক ফোন কল পাচ্ছেন। তিনি বলেন, “একজন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মহিলা তার স্বামীর সঙ্গে এসে প্রি-টার্ম ডেলিভারির জন্য নাম নথিভুক্ত করলেন। তার সন্তান জন্মানোর সম্ভাব্য তারিখ মার্চের শেষের দিকে।”
নতুন চ্যালেঞ্জ
ট্রাম্পের এই নতুন আদেশ বহু অভিবাসী দম্পতির জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে এই তাড়াহুড়ো শুধু মায়েদের নয়, শিশুদেরও বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।