ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বরফ ঢাকা পাহাড় শান্তি আনে, সময়ের কাটায় প্রাণহীন দেহ সজাগ থাকে (Khyber Pakhtunkhwa)। ২৮ বছর পরে উদ্ধার হলো এক তরুণের অক্ষত দেহ। স্থানীয় রাখাল ওমর খান জানিয়েছেন যে, তিনি যা দেখেছেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য, দেহটি সম্পূর্ণরূপে অক্ষত ছিল, পোশাকও ছেঁড়েনি একটুও…

কে এই তরুণ? (Khyber Pakhtunkhwa)
পাকিস্তানের প্রত্যন্ত (Khyber Pakhtunkhwa) অঞ্চলে গলতে থাকা হিমবাহের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে এক তরুণের মৃতদেহ (Missing Man), আজ থেকে ২৮ বছর আগে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। অদ্ভুত প্রাকৃতিক রহস্যের কারণে সেই মৃতদেহ অটুটভাবে সংরক্ষিত রয়ে গিয়েছে যেন। পরিবারের সঙ্গে একটি জায়গায় ঘুরতে গিয়ে হিংসাত্মক আক্রমণ থেকে বাঁচতে পালাতে শুরু করেছিলেন এই তরুণ, আর তখনই তাঁকে শেষবারের মত দেখা গিয়েছিল। তারপর থেকে তাঁর পরিবারও তাঁকে খুঁজে পায়নি। এই তরুণের নাম জানা গিয়েছে নাসিরুদ্দিন।
কোথায় মিললো ? (Khyber Pakhtunkhwa)
৩১ জুলাই পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কোহিস্তান এলাকার স্থানীয় কিছু বাসিন্দা লেডি মিডোর হিমবাহর কাছে এই সংরক্ষিত মৃতদেহটি আবিষ্কার করেন। এই হিমবাহটি ক্রমেই গলতে শুরু করেছে। এই মৃতদেহের সঙ্গে একটি পরিচয়পত্রও পাওয়া গিয়েছে আর তা থেকেই তাঁর নাম ও তিনি কোন দেশের বাসিন্দা তা জানা গিয়েছে।
অবিশ্বাস্যকর ঘটনা
এক সংবাদমাধ্যমকে স্থানীয় বাসিন্দা রাখাল ওমর খান জানিয়েছেন যে, তিনি যা দেখেছেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য, দেহটি সম্পূর্ণরূপে অক্ষত ছিল, পোশাকও ছেঁড়েনি একটুও। দেখে মনে হয়েছিল, পাহাড়ের কোলে এক ব্যক্তি ঘুমিয়ে আছে। পুলিশ এই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করার পরে স্থানীয় মানুষরা নাসিরুদ্দিন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানায়।
পুলিশ জানিয়েছে যে ১৯৯৭ সালের জুন মাসে তুষারঝড়ের সময় নাসিরুদ্দিন হিমবাহের একটি ফাটলে পড়ে যান এবং নিখোঁজ হন।

বাঁচার তাগিদে মৃত্যুর সম্মুখীন
দুই সন্তানের বাবা নাসিরুদ্দিন নামের এই তরুণ ১৯৯৭ সালে তাঁর ভাই কাথিরুদ্দিনের সঙ্গে ঘোড়ায় চড়ে ভ্রমণ করছিলেন এবং সেই সময়ই তিনি একটি হিমবাহের ফাটলের মধ্যে পড়ে যান। গ্রামের হিংসাত্মক আক্রমণ, সংঘাতের হাত থেকে বাঁচতে তারা পাহাড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং কাথিরুদ্দিন এই যাত্রায় বেঁচে যান।
জলবায়ু পরিবর্তনে গলছে হিমবাহ
পরিবেশবিদরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোহিস্তানে তুষারপাত কমে যাওয়ায় হিমবাহগুলো সরাসরি সূর্যের আলোয় গলে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এই হিমবাহগুলো দ্রুত গলতে শুরু করেছে। ২০২৩/২৪ পর্যবেক্ষণ বছরের প্রাথমিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে, ওয়ার্ল্ড হিমবাহ পর্যবেক্ষণ পরিষেবা দ্বারা ট্র্যাক করা, ৯৭০ সাল থেকে প্রায় ২৭.৩ মিটার তরল জলের সমান বরফের ভর হারিয়েছে – যা প্রতিটি হিমবাহের সমগ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০ মিটার (৯৮ ফুট) বরফ কেটে ফেলার সমান।