ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মালদার তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার ওরফে বাবলা খুনের(TMC Councilor Murder Case) ঘটনায় গ্রেফতার করা হল তৃনমূল দলেরই আর এক নেতাকে। তিনি হলেন তৃনমূল দলের টাউন সভাপতি তথা হিন্দি সেলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ছাড়াও এই খুনের ঘটনায় স্বপন শর্মা নামে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে মালদা জেলা পুলিশ।
এখনও পর্যন্ত দুলালচন্দ্র খুনে গ্রেফতারের সংখ্যা (TMC Councilor Murder Case)
গত ২ জানুয়ারি মালদার ইংরেজবাজার শহরে দুষ্কৃতিদের গুলিতে খুন হন তৃণমূল নেতা(TMC Councilor Murder Case) তথা কাউন্সিলর দুলাল সরকার। সেই খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।প্রায় ২১ ঘণ্টা জেরা করার পর গ্রেফতার করা হয় তাদের। আগে ৫ জন গ্রেফতার হয়েছিল। তার মধ্যেও দুজন হল বিহারের বাসিন্দা। তৃণমূল কংগ্রেস টাউন সভাপতি নরেন্দ্র তিওয়ারি ছাড়াও গ্রেফতার হয় স্বপন শর্মা নামের আরও একজন ব্যক্তি(TMC Councilor Murder Case)।
থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ নরেন্দ্রনাথসহ তাঁর দুই ভাইকে (TMC Councilor Murder Case)
দুলাল সরকার খুনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। মঙ্গলবার কয়েক দফায় ওই নেতাকে ইংরেজবাজার থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। থানায় ডেকে পাঠানো হয় নরেন্দ্রনাথের দুই ভাই ধীরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং অখিলেশ তিওয়ারিকেও। তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। পরে রাতেই গ্রেফতার করা হয় নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে।
আরও পড়:TMC Leader Murder News: দুষ্কৃতীর গুলিতে খুন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
কী বলছেন দুলালের স্ত্রী চৈতালি?
দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালি দাবি করেছিলেন এই খুনের পিছনে দলেরই কেউ জড়িত থাকতে পারে। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, ‘কিছু দলীয় মানুষের হিংসা এর পেছনে রয়েছে। কারণ বাবলা সরকার বা দুলাল সরকার রাজনৈতিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এমন জায়গায় আছে যেটা অন্যদের হিংসার মূল কারণ। আমার কাছে যা যা তথ্য আছে সেই সবকিছুই দলনেত্রীকে জানাব।’
স্বপনের নামে রয়েছে আরও অনেকগুলি মামলা
স্বপন নামে যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর নামেও রয়েছে অনেকগুলি মামলা। এমকি খুনের অভিযোগও। জেলও খেটেছেন তিনি। জানা গেছে দুলালচন্দ্রকে খুন(TMC Councilor Murder Case) করার জন্য স্বপনকে নিযুক্ত করেছিলেন নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। তবে এই খুনে স্বপন কিভাবে কতটা জড়িয়ে আছে সে বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
বিবাদ লেগেই থাকতো নরেন্দ্রনাথ ও দুলালের
ইংরেজবাজার শহরে নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে বাবলা সরকারের বিবাদ প্রায় সবসময় লেগেই থাকতো। ২০২২ সালের পুরসভা নির্বাচনের পর নরেন্দ্রনাথের ওপর হামলা চালিয়েছিল বাবলার অনুগামীরা বলে জানা যায়। তার পর থেকে সেই বিবাদ আরও চরম সীমায় পৌঁছায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দিনে দিনে কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন নরেন্দ্রনাথ। শহরে প্রভাব বিস্তার করছিলেন দুলাল সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন বাবলা সরকারের। এই ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারছিলেন না নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি।
কী বললেন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ
ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী এই খুনের সঙ্গে নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির কোনো যোগ থাকতে পারে সে বিষয়ে সন্দেহ করেছিলেন আগেই। তিনি বলেছিলেন, “দুলালকে মারবই বলেছিলেন নরেন্দ্রনাথ। আমাদের পৌরসভা ভোটের পরই নরেন্দ্রনাথ অনেককে বলেছিল, আমি দুলাল সরকারকে মারবই। আমাদের অনেকদিন ধরেই সন্দেহ ছিল। আবার দ্বিতীয় স্বপন শর্মা। সিপিএমের কন্টাক্ট কিলার। ও তো প্রচুরবার আমার ওপর হামলা করেছিল। এটা রাজনৈতিক নয়। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতেই খুন।”