ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতকে সাত দিনের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে দ্রুত বিচার শেষ করার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। সন্দীপ ঘোষ (Sandip Ghosh) সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি মিলেছে বলে এদিন আদালতে জানাল সিবিআই। তাদের তদন্তও প্রায় শেষ বলে জানালো সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এদিন আদালতে একটি মুখবন্ধ খামও জমা দেয়। তবে ইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। ইডি-কে দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের।
আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় নিম্ন আদালতকে আগামী সাত দিনের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার সিবিআই মামলার শুনানিতে আদালতকে জানালো খুব শীঘ্রই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার নির্দেশ (Sandip Ghosh)
মঙ্গলবার শুনানিতে আদালতে একটি মুখবন্ধ খামও জমা দেয় সিবিআই (CBI)। সিবিআইয়ের তরফে এদিন আদালতে জানানো হয়, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আক্তার আলির দায়ের করা এই আর্থিক দুর্নীতির মামলায় হাসপাতালের সাসপেন্ডেড অধ্যক্ষ তথা অন্যতম অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষের (Sandip Ghosh) বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য অবশেষে অনুমতি মিলেছে রাজ্যের। অভিযুক্ত সরকারি অফিসারদের বিরুদ্ধে ট্রায়াল শুরুর জন্য কনসেন্ট পেয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার জন্য অভিযুক্তদের থেকেও সম্মতি নেওয়া হয়েছে। দ্রুত বিচার শুরু হবে।
এদিন, এএসজি এসভি রাজু আদালতকে জানান, সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আরজি করের খুন ও ধর্ষণ মামলার সঙ্গেই দুর্নীতির মামলাটিও চলছে। গত ২৩ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি করের দুর্নীতি মামলার তদন্ত হাতে নিয়েছে সিবিআই। পরে সুপ্রিম কোর্ট তাতে শিলমোহর দেয়। গত ২৯ নভেম্বর চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: Bus Drivers on Strike: কন্ডাক্টরকে বেধরক মারধর! প্রতিবাদে বাস ধর্মঘট কালনা-কৃষ্ণনগর-রানাঘাট রুটে
তবে এদিনের শুনানিতে ইডির ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এই আদালতের এই মামলায় আর কিছু করার নেই। ইডি (ED) চার্জশিটও দেয় না আর বিচার প্রক্রিয়াও শুরু করে না।’ তার উত্তরে, ইডির আইনজীবী জানান, তারা ECIR দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছেন। ২২ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে জেরাও করা হয়েছে। তখন ইডি-কে বিচারপতি ঘোষ দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন।
আগামী ৩০শে জানুয়ারি আলিপুর কোর্টে পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তাই সব পক্ষের বক্তব্য শুনে এদের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নিম্ন আদালতকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া বা ট্রায়াল শুরু করে যত দ্রুত সম্ভব বিচার শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Arms Recovered: শিয়ালদহ স্টেশনের কাছেই মিলল অস্ত্র কারখানার হদিশ, গ্রেফতার উত্তরপ্রদেশের ৫ বাসিন্দা
উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরই হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আক্তার আলি। তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের (Sandip Ghosh) বিরুদ্ধে তিনি সরাসরি আর্থিক বিনিয়ম, হাসপাতালের সরঞ্জাম কেনায় দুর্নীতি, টাকার মাধ্যমে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ আনেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট গোটা ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। ঘটনায় সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই আর্থিক দুর্নীতির ঘটনায় সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হওয়া বিপ্লব সিং, আফসার আলি, সুমন হাজরা, আশিস পাণ্ডে এখনও জেলবন্দী রয়েছেন।