ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শনিবার সকাল সাড়ে পাঁচটায় শালিমার স্টেশনে ঢোকার আগে হাওড়ার নলপুরের কাছে আবারও একটি রেল দুর্ঘটনা (Rail Accident) ঘটে। এই রেল দুর্ঘটনায় শালিমার-সেকেন্দ্রাবাদ সাপ্তাহিক এক্সপ্রেসের চারটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিন ছিটকে দুই থেকে এক নম্বর লাইনে চলে এসেছে। তবে কোনও হতাহতের খবর নেই।
নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে (Rail Accident)
এই ঘটনায় (Rail Accident) আবারও ভারতীয় রেলে যাত্রী নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ভারতীয় রেলে একের পর এক রেল দুর্ঘটনার খবর সামনে আসে মাঝে মধ্যেই। প্রায়ই কোথাও রেলের কামরা লাইনচ্যুত হয়ে, কোথাও দুটি ট্রেনের সংঘর্ষের খবর সামনে আসছে। ২০২৩ সালের ভয়াবহ ওড়িশার বাহানাগাবাজার রেল দুর্ঘটনা থেকে ২০২৪ সালে নিউ জলপাইগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা রেল দুর্ঘটনা গোটা দেশের রেলের নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: দু’দিনের পাহাড় সফরে মুখ্যমন্ত্রী, মঙ্গলে জিটিএ-র সঙ্গে বৈঠক
সবথেকে বড় রেল নেটওয়ার্ক?
ভারতীয় রেল বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ রেল নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি। ভারতীয় রেলের মোট রেল ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৭,৪১৫ কিলোমিটার। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম রেল রেল নেটওয়ার্ক। দীর্ঘ রেল নেটওয়ার্কের তালিকায় আমেরিকা, রাশিয়া, ও চিনের পরেই নাম রয়েছে ভারতের। ভারতীয় রেলে প্রতিদিন ১ কোটি ৮০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ভ্রমণ করেন। সঙ্গে ভারতীয় রেলের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০ লক্ষ টনেরও বেশি পণ্য পরিবহন করা হয়। এত বিশাল রেল ব্যবস্থাকে প্রায় প্রত্যেক মানুষই নিরাপদ যাতায়াতের মাধ্যম মনে করতো এতদিন।
সাম্প্রতিক ঘটনা
কিন্তু সম্প্রতি কিছু বছরে ভারতীয় রেলে একের পর এক দুর্ঘটনায় বার বার প্রশ্ন উঠছে ভারতীয় রেলের নিরাপত্তায়। এত দুর্ঘটনার পরেও কেন টনক নড়ছে না ভারতীয় রেলের? ভারতীয় রেলে যুক্ত হয়েছে সেমি হাইস্প্রিড ট্রেন বন্দেভারত। বিলাসবহুল রেল যাত্রা উপভোগ করতে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করছেন যাত্রীরা। কিন্তু সেই রেল যাত্রায় নিরাপত্তা কেন দিতে পারছে না রেল? শুধু কী নতুন বিলাস বহুল ট্রেন চালু করেই যাত্রীদের আস্থা বজায় রাখতে পারবে ভারতীয় রেল? ভারতে সেমি হাইস্প্রিড ট্রেন চালু করার পরেও কেন কমছে না রেল দুর্ঘটনা?
আরও পড়ুন: Kolkata News: ভিনরাজ্যে গিয়ে যাদবপুরের অধ্যাপকের রহস্যমৃত্যু!
মূল কারণ
এর অন্যতম কারণ হল ভারতীয় রেলের ট্র্যাকের আপগ্রেড না হওয়া। রেলের ট্র্যাক প্রত্যেক ৩০ বছর পর পর পরিবর্তন করতে হয়। ভারতীয় রেল এই কাজ প্রত্যেক বছর অল্প অল্প করে করে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে ভারতীয় রেল দফতর পুরনো রেলপথ আপগ্রেড করার বাজেট কমিয়ে দিয়েছে। তুলনায় ভারতীয় রেল নতুন রেলপথ পাতার কাজে বেশি বাজেট বরাদ্দ করছে। ফলে পুরনো রেলপথ গুলিতে ট্রেন চলাচল অসুরক্ষিত হয়ে পরছে। এমনকি ভারতীয় রেলের ট্র্যাক গুলিতে ১০০ থেকে ১৪০ কিমির বেশি গতিবেগে ট্রেন চলাচল করা নিরাপদ নয়। এজন্য ভারতীয় রেলের পুরনো ট্র্যাক গুলির আপগ্রেডেশন সবচেয়ে আগে জরুরী।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলের মাধ্যমে যুক্ত হন আমাদের সঙ্গে। ক্লিক করুন এখানে।
কম কর্মী
কিন্তু সেই কাজ অনেক ধিরে ধিরে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতীয় রেলে কর্মী সংখ্যা অনেক কম। ভারতীয় রেল নতুন কর্মী নিয়োগেও অনেক বিলম্ব করছে। কম কর্মী দিয়ে এই বিশাল রেল পথে রেল পরিষেবা চালাচ্ছে ভারতীয় রেল। যা ভারতীয় রেলের সুরক্ষায় সবচেয়ে বড় বাধা। পুরনো রেল পথের আপগ্রেডেশন ও ভারতীয় রেলে পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগ না হলে ভারতীয় রেলের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।