ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: অরুণ রায়ের বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর (Arun Roy)। এই বয়সে চলে যাওয়াটা ঠিক হলো না। বাংলা বিনোদন দুনিয়ার কেউ এই ঘটনাটা মেনেই নিতে পারছেন না। গত বৃহস্পতিবার সকাল বেলা না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন বিখ্যাত পরিচালক অরুণ রায় (Arun Roy) । তাঁর শেষ বিদায়ের কান্নায় ভেঙে পড়লেন দেব-রুক্মিণী (Dev–Rukmini)। তখন টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে দাঁড়িয়ে রয়েছে শববাহী গাড়ি। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন দেব। চোখ লাল হয়ে গিয়েছে। দেবের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রুক্মিণী। তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। আর এভাবেই পরিচালক অরুণ রায়কে চোখের জলের শেষ বিদায় জানালেন তাঁরা।
দেবের সঙ্গে অরুণ রায়ের সম্পর্ক (Arun Roy)
‘বাঘা যতীন’ ছবির সময় থেকেই, দেবের সঙ্গে অরুণ রায়ের (Arun Roy) বেশ ভালোই সম্পর্ক ছিল। অরুণ রায়ের হাত ধরেই এই ছবিতে দেবকে প্রথম দেখা গিয়েছিল বিপ্লবী চরিত্রে। শুটিং চলাকালীন শোনা যায়, পরিচালক মারণ রোগে আক্রান্ত। কিন্তু কাজ থামিয়ে রাখেননি। মনের জোর ছিল তাঁর। অসুস্থ অবস্থায় টানা শুটিং করেছিলেন। একটা সময় পরিচালক জানিয়েছিলেন, যখন দেবকে বাঘা যতীনের কথা বলা হয়। তখন তো দেব রীতিমত লাফিয়ে উঠেছিলেন। ছবিতে হ্যাঁ বলতে বেশি ভাবেননি।
হৃদ্যতার সম্পর্ক (Arun Roy)
এই ছবি বানানোর সময় খরচ করতে কার্পণ্য করেননি। পরিচালকের (Arun Roy) নির্দেশ মেনে চলতেন দেব। এই ছবির জন্য দেব প্রচুর পরিশ্রম করেছিলেন। তখন থেকেই অরুণ রায় এবং দেবের মধ্যে একটা হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একই ভাবে পরিচালকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে রুক্মিণীর। যদিও এই পরিচালকের কোনও ছবিতে রুক্মিণী অভিনয় করেননি। পরিচালক অসুস্থ থাকাকালীন হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন দেব। তখন অরুণ রায় ভালো ভাবে কথা পর্যন্ত বলতে পারেননি। আসলে তাঁর এই চলে যাওয়া বাংলা বিনোদন দুনিয়ার জন্য একটা বড় ক্ষতি এবং ক্ষত। যেটা কোনও দিন পূরণ হওয়ার নয়।
আরও পড়ুন: Shah Rukh Khan: বিজ্ঞাপন করে কটাক্ষের মুখে শাহরুখ, দিলেন কড়া জবাব
জীবনের কঠিন সমইয়ে ছিলেন পজেটিভ
অরুণ রায়ের ‘হীরালাল সেন’, ‘৮/১২ বিনয় বাদল দীনেশ’ এর মতো ভিন্ন ঘরানার ছবি মানুষকে ভাবতে শিখিয়েছিল। সবথেকে বেশি চর্চায় রয়েছে তাঁর পরিচালিত ‘চোলাই’। তিনি কাজের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করতে পছন্দ করতেন না। বেশ কিছু বছর ধরেই ভুগছিলেন কণ্ঠনালীর ক্যান্সারে। এর আগেও চিকিৎসা চলেছে। তবে প্রতিকূলতাকে তিনি অতটা পাত্তা দিতেন না। অসুস্থ অবস্থায় শুটিং করেছেন। জীবনের কঠিন সময় ছিলেন পজেটিভ। অসুস্থতা সংক্রান্ত প্রশ্ন তিনি খুব একটা পছন্দ করতেন না। পরিচালক মনে করতেন, এই রোগ যে কারোর হতে পারে। আর সেটা কোনও আলোচনার বিষয় হতে পারে না। তাঁর মনোবল দেখে ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরা বারংবার প্রশংসা করতেন ।
আরও পড়ুন: Arman Malik: নতুন বছরে চমক! বিয়ে সারলেন আরমান মালিক
শোকস্তব্ধ টলিউড
অসুস্থ অবস্থায় তিনি শুধু ‘বাঘা যতীন’ নয়, শেষ করেছেন ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’র কাজ। তাঁর মতো খ্যাতনামা গুণী পরিচালককে হারিয়ে শোকস্তব্ধ গোটা টলিউড। নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনে এমন খবর আসবে কেউ ভাবতেও পারেননি।