SSC Scam: নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি , তথ্য লুকানোর অভিযোগে কমিশনকে ভর্ৎসনা আদালতের

স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে সুপারিশপত্র দিয়ে থাকে এসএসসি। তার পরে নিয়োগপত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।  এদিন আদালতে পর্ষদ জানিয়েছে যাদের সুপারিশপত্র দেওয়া হওয়া হয়েছিল তাদের ছাড়া কাউকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি জানুন বিস্তারিত...

SSC Scam: নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি , তথ্য লুকানোর অভিযোগে কমিশনকে ভর্ৎসনা আদালতের
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এসএসসি'র তৃতীয় রিপোর্টেও সন্তুষ্ট হতে পারল না কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। সোমবারই আদালতের নির্দেশে  নবম-দশমে নিয়োগের সুপারিশ পত্র প্রত্যাহার নিয়ে নিজেদের অবস্থান রিপোর্ট আকারে জমা দিয়েছিল এসএসসি। কিন্তু সেই রিপোর্টে আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেনি। আদালতের পর্যবেক্ষণ এই রিপোর্ট যথেষ্ট নয়। তাই আগামী বুধবার আবারও কমিশনকে নতুন করে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে তাদের অবস্থান মোটেও স্পষ্ট নয়। আগামী বুধবার আবারও এই মামলার শুনানি।

হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি এবং নবম-দশমের অনেকের চাকরি বাতিল হয়। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে চাকরিহারাদের একাংশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ফেরত পাঠিয়ে দেয়। প্রথম দিনের শুনানিতেই হাইকোর্ট এসএসসি-কে বলেছিল, অবস্থান জানিয়ে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। অনিয়মের ঘটনা ঘটলে তাদের কী কাজ হবে এবং এ ক্ষেত্রে তারা কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানতে চায় আদালত।

এসএসসি আদালতকে জানায়, সিবিআই তদন্তের ভিত্তিতে এবং হাইকোর্টের নির্দেশে নবম-দশমে মোট ৯৫২ জনের সুপারিশপত্র বাতিল করেছে তারা। ওই ৯৫২ জনের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটে অনিয়ম হয়েছিল বলে স্বীকার করে নেয় এসএসসি। তবে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র ক্ষেত্রে কীসের ভিত্তিতে সুপারিশপত্র বাতিল করা হয়েছে, তার সদুত্তর দিতে পারেনি এসএসসি। এরপরই এসএসসি-কে তীব্র ভর্ৎসনা এবং অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি বসাক বলেন, 'প্রথম দিন থেকে আদালত জানতে চাইছে এসএসসি-র মাধ্যমে সুপারিশ পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভুল হয়ে থাকলে, তা কি আপনারা খুঁজে পেয়েছেন? খুঁজে পেয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ করেছেন? কিন্তু এক মাস হয়ে গেল আপনারা তার কোনও সদুত্তর আদালতের কাছে দিতে পারছেন না। কমিশন কেন সব তথ্য আদালতের সামনে নিয়ে আসতে লজ্জা পাচ্ছে? আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আপনারা কিছু লুকোতে চাইছেন।'

স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে সুপারিশপত্র দিয়ে থাকে এসএসসি। তার পরে নিয়োগপত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।  এদিন আদালতে পর্ষদ জানিয়েছে যাদের সুপারিশপত্র দেওয়া হওয়া হয়েছিল তাদের ছাড়া কাউকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। অন্যদিক, এসএসসি'র দাবি, নবম-দশমের নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৮৩ জনের সুপারিশপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে বেনিয়ম হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২২ জনের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে। তা শুনে বিচারপতি প্রশ্ন, 'তাহলে বাকি ৬১ জনের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেননি কেন? উচ্চ আদালতের কোনও নিষেধ বা স্থগিতাদেশ আছে? সুপ্রিম কোর্টের কোনও স্থগিতাদেশ আছে?' তার উত্তরে আদালতের কোনও নিষেধ বা স্থগিতাদেশ নেই বলেই কমিশন জানায়। তখন বিচারপতি বসাক বলেন, 'সিবিআই পরে অনিয়ম খুঁজে না পেলে কি ওই প্রার্থীদের সুপারিশপত্র আবার ফিরিয়ে দেবে এসএসসি? ওই ৬১ জনের বেতন পাওয়ার কোনও অধিকার নেই।' কমিশন এদিন আদালতে আরও জানিয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্যানেল থেকে সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়েছে। সুপারিশপত্র দেওয়া হয়নি, এমন প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে কমিশন।