রিমিক মাঝি, কলকাতা: পঞ্জাব ম্যাচ জিতে গত বছর শেষ করেছিল। নতুন বছরের শুরুটাও জয় দিয়ে করল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan)। বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে আইএসএলে হায়দরাবাদের (hyderabad) বিরুদ্ধে দাপট দেখিয়ে জয় তুলে নিল সবুজ-মেরুণ ব্রিগেড। ম্যাচের ফলাফল ৩-০। একপেশে ম্যাচ জুড়ে শুধুই আধিপত্য ছিল সবুজ-মেরুণ জার্সির।
বাগানের আত্মঘাতী গোল (Mohun Bagan)
শুরু থেকেই ম্যাচের লাগাম নিয়ে নেয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan)। ফলে প্রথম গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি হোসে মোলিনার দলকে। ম্যাচের ৯ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। বাঁদিক থেকে লিস্টন কোলাসোর মাইনাস ধরে গোল লক্ষ্য করে শট নেন সাহাল। সবুজ-মেরুণ মিডফিল্ডারের শট প্রতিহত করেন হায়দরাবাদ গোলরক্ষক আর্শদীপ সিং। ফিরতি বল সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা হায়দরাবাদী ডিফেন্ডার স্টিফেন সেপিচের গায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। মোহনবাগানের দ্বিতীয় গোল প্রথমার্ধের শেষের দিকে।
আরও পড়ুন: Khel Ratna Award: জল্পনার অবসান, খেলরত্ন পাচ্ছেন মনু! পুরস্কার পাবেন আরও তিন জন
৪১ মিনিটে আবারও লিস্টনের সেন্টার ডাইভ দিয়ে হেড করে জালে জড়িয়ে দেন সবুজ-মেরুণ ডিফেন্ডার টম অলড্রেড। এদিন গোটা ম্যাচে সমস্ত আক্রমণই তৈরি হল বাঁদিক থেকে লিস্টনের পা থেকেই। তাই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও পেলেন তিনি। তবে প্রথমার্ধে তিন গোলে এগিয়ে যেতে পারত মোহনবাগান (Mohun Bagan)। ১৭ মিনিটে কামিংসের লম্বা থ্রু থেকে বল ধরে বক্সের ঢুকে পড়েন জিমি ম্যাকলারেন। কিন্তু অজি বিশ্বকাপারের শট বারে লেগে প্রতিহত হয়।
হোম ম্যাচেও জয় (Mohun Bagan)
মোহনবাগানের তৃতীয় গোল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। ৫১ মিনিটে জিমির সঙ্গে দুরন্ত বোঝাপড়ায় ওয়ান টু ওয়ান খেলে দৃষ্টিনন্দন গোল করে যান জেসন কামিংস। তবে এদিন গোল সংখ্যা আরও বাড়ানোর সুযোগ ছিল মোহনবাগানের (Mohun Bagan) কাছে। লিস্টন, জিমিরা সহজ সুযোগ মিস না করলে ৫-৬ গোলে জিততে পারত। ফলে মরশুমে সবথেকে বড় ব্যবধানে জয়ের সুবর্ণ সুযোগটাও হাতছাড়া হল। এদিন যত ভালো ফুটবল উপহার দিল মোহনবাগান তারথেকেও খারাপ ফুটবল খেলল হায়দরাবাদ। মাঝমাঠ থেকে রক্ষণ-তথৈবচ অবস্থা। প্রথম লেগের ম্যাচেও হায়দরাবাদকে তাদের ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারিয়েছিল মোহনবাগান। এবার হোম ম্যাচেও জয় এল।

গত ১৪ ডিসেম্বর যুবভারতীতে কেরালার বিরুদ্ধে বছরের শেষ হোম ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস জয়ের পরই এমবিএসজি কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা সমর্থকদের নতুন বছরের উপহার হিসেবে এদিনের ম্যাচে বিনামূল্যে মাঠে বসে খেলা দেখার কথা ঘোষণা করেছিলেন। আর ফুটবলাররাও জিতে সমর্থকদের নিউইয়ার গিফ্ট দিলেন। তবে জয়ের থেকেও মোহনবাগান টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সমর্থকদের কাছে বড় স্বস্তি দলের গেম মেকার গ্ৰেগ স্টুয়ার্টের চোট সারিয়ে মাঠে ফেরা। এদিন শেষ ১৫ মিনিট কামিংসের পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন স্টুয়ার্ট।
সবুজ-মেরুণের পরের ম্যাচ আগামী ১১ তারিখ ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। গঙ্গাসাগরের জন্য ওই দিন কলকাতায় ডার্বি হওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবুও তার আগে স্টুয়ার্টের ফিট হয়ে ওঠাটা বড় স্বস্তি দিচ্ছে সবুজ-মেরুণ (Mohun Bagan) সমর্থকদের। এদিন জিতে ১৪ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষেই রইল মোহনবাগান। অপরদিকে ১৪ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরেই রইল হায়দরাবাদ।
আরও পড়ুন: Santosh Trophy: ‘বাংলা বিশ্বকাপও খেলতে পারে’, সন্তোষ-জয়ের পরে উল্লসিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এদিনের জয়ে স্বভাবতই খুশি অধিনায়ক শুভাশিস বোস থেকে দুই গোলদাতা টম অলড্রেড ও জেসন কামিংস। তবে আরও বেশি গোলে জেতা উচিত ছিল বলেই স্বীকার করে নিলেন সকলেই। সেই সঙ্গে এই জয় ডার্বির আগে দলকে উদ্দীপ্ত করবে বলেই মত তিনজনের। প্রথম একাদশে সুযোগ না পাওয়াটাই গোলের খিদে ও জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল বলেই জানিয়ে গেলেন কামিংস। সবুজ-মেরুণ অধিনায়ক শুভাশিস তো জানিয়ে দিলেন তিনি কলকাতাতেই ডার্বি (Kolkata) খেলতে চান। ঘরের মাঠে প্রিয় সমর্থকদের সামনেই ডার্বি খেলতে পারলে খুশি হবেন তিনি।
আরও পড়ুন: Shubman Gill: ৪৫০ কোটির কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে শুভমান, সিআইডি তদন্তে উঠে এলো নাম
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য ১১ তারিখ ডার্বি ম্যাচে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে আগেই আয়োজক মোহনবাগানকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে ডার্বি কলকাতার বদলে অন্য রাজ্যে হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে মোহনবাগান (Mohun Bagan) সচিব দেবাশিষ দত্ত বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে জানালেন এখনও ডার্বি নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দু-একদিনের মধ্যেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে আগামী ১৮ জানুয়ারি ক্লাব প্রাঙ্গণে সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন বাংলা দলকে ক্লাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করা হবে বলেও ঘোষণা করলেন মোহনবাগান সচিব।