উমা কৈলাসে ফিরে যেতেই বোধন শুরু হয় এই গ্রামে, দুর্গোৎসবে মাতোয়ারা করণদীঘি

করণদিঘীর সিঙ্গারদহে মানুষরা কিন্তু দুর্গাপুজোর দশমীর ৮দিন পর থেকেই মেতে ওঠেন দুর্গাপুজোয়।

উমা কৈলাসে ফিরে যেতেই বোধন শুরু হয় এই গ্রামে,  দুর্গোৎসবে মাতোয়ারা করণদীঘি

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: দুর্গাপুজা কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকদিন। তবুও আপনি যদি ফের পুজোর আমেজ নিতে চান তাহলে চলে আসুন উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘীর সিঙ্গারদহে। এখানকার বাসিন্দারা মূলত রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষজন এই পুজো করে থাকে।

 দুর্গাপুজোর দশমীর ৮দিন পর এখানে দেবীর বোধন হয়। পুজো হয় চারদিন ধরে। পুজো উপলক্ষে মেলাও বসে গ্রামে। উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘী ব্লকের সিঙ্গারদহ, ফতেপুর, মাংনাভিটা, চুনামারি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের রাজবংশী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজন এই 
পুজোয় সামিল হলেও দূরদুরান্ত থেকে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় এই পুজো উপলক্ষে।

উল্লেখ্য, ৪ দিনের আনন্দ হৈ-হুল্লোড় শেষে মা ফিরে গিয়েছেন কৈলাসে। স্বভাবতই বিষন্ন মানুষের মন। তবে উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘীর সিঙ্গারদহে মানুষরা কিন্তু দুর্গাপুজোর দশমীর ৮দিন পর থেকেই মেতে ওঠেন দুর্গাপুজোয়। এখানে সোনামতি কুম্ভরানী হিসেবে পুজিত হন দেবী দুর্গা। করণদিঘীর অন্যত্র যখন বিষাদের সুর তখনই এই গ্রামে দেবীর বোধনকে কেন্দ্র করে উৎসাহ উদ্দীপনায় ভেসে ওঠে গোটা গ্রাম।

 দুর্গাপুজোর সঙ্গে এই পুজোর মিল রয়েছে অনেকটাই। যেমন দুর্গাপুজোর মতই সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত দেবী পূজিতা হন এখানে। নিয়মানুসারে, দশমীর আট দিন বাদে প্রথম মঙ্গলবার ষষ্ঠী পুজো সম্পন্ন হয়। তারপর সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী পুজো পর পর অনুষ্ঠিত হয়। দুর্গাপুজোর মতই এখানে মা দুর্গার পাশাপাশি লক্ষী, গনেশ, কার্তিক ও সরস্বতীর মূর্তিও থাকে। পুজো উপলক্ষে বলি প্রথা প্রচলিত রয়েছে এখানে। পুজোকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে গ্রামে। মায়ের কাছে প্রার্থনা জানাতে দুর-দুরান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় এখানে।

 পুজোর বয়স কয়েকশো বছর বলে এই গ্রামের পাশ্ববর্তী গ্রামগুলিতে দুর্গা পুজো হলেও এই পুজোর গুরুত্বই আলাদা। তাই এখানকার পুজোতে ভক্তির টানে ছুটে আসেন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। মায়ের নামে বেশ কয়েক বিঘা জমি আছে যে জমির ফসলের লাভ থেকে এই পুজো হয়। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, মূলত মায়ের আর্শিবাদেই তাঁদের গ্রাম আজও শষ্য শ্যমলা এবং কোনও বিপদ গ্রামবাসীকে স্পর্শ করতে পারে না।

পুজো উদ্যোক্তারা জানান, শনিবার দশমীতে হবে বিসর্জন। তবে তার আগে বুধবার থেকে ৩ দিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পুজো এবং মেলা ঘুরে এলাকাবাসীর উৎসাহ উদ্দীপনার শেষ নেই। ৪-৫ টি গ্রামের মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন পুজো উপলক্ষে। এখানে দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। সকলের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। তাই দূরদুরান্ত থেকেও মানুষজন পুজো দেখতে আসেন এখানে। পুজোর ক'টা দিন মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয় এই পুজো প্রাঙ্গন!