ঘুটে আর তুষ দিয়ে জ্বালানো আগুনে বাড়ির পুরুষদের বসিয়ে শুরু হয় দত্তবাড়ির পুজো!

রায়গঞ্জের দত্ত বাড়ির দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল এভাবেই। পরিবারের ধনসম্পদ বৃদ্ধি ও সংরক্ষনের জন্যই এমনই বিধান রায়গঞ্জের প্রভাবশালী পরিবার দত্তবাড়ির পুজোয়।

ঘুটে আর তুষ দিয়ে জ্বালানো আগুনে বাড়ির পুরুষদের বসিয়ে শুরু হয় দত্তবাড়ির পুজো!

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: পিতৃপক্ষের অবসান। শুরু মাতৃপক্ষ। মহালয়া যেতেই ঢাকের পিঠে পড়ে গিয়েছে কাঠি। শহর থেকে মফস্বল চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। কুমোরটুলিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে। শুধু তাই নয়, বনেদি বাড়ির পুজো ঘিরেও চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। রায়গঞ্জের দত্ত বাড়ির দুর্গোৎসবে পঞ্চমীতে মাটির হাঁড়িতে ঘুটো আর তুষ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, আর বাড়ির বউরা ঐ জ্বলন্ত আগুনের সামনে বাড়ির ছেলেদের বসিয়ে ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করে মিষ্টি তুলে দেন তাদের হাতে। এরপরই শুরু হয় দেবীর বোধন। 

রায়গঞ্জের দত্ত বাড়ির দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল এভাবেই। পরিবারের ধনসম্পদ বৃদ্ধি ও সংরক্ষনের জন্যই এমনই বিধান রায়গঞ্জের প্রভাবশালী পরিবার দত্তবাড়ির পুজোয়। কিন্তু দিনকাল পাল্টেছে সেসব নিয়ম আর এখন করা না হলেও, ঢেঁকিতে ধান চাল ও মশলা পাতি কুটেই দেবীর সমস্ত ভোগের আয়োজন করেন দত্ত বাড়ির মহিলারা।

 উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের প্রানকেন্দ্র মোহনবাটিতে দুর্গাভান্ডার বলে খ্যাত দত্ত বাড়ির দুর্গোৎসব বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে অন্যতম পুজো। ১৯৪৮ সালে অবিভক্ত বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার বরট গ্রামে দত্ত বাড়ির দুর্গাপুজোর সূচনা করেন সুধীর দত্ত। এরপর ১৯৬২ সালে এপার বাংলায় রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটিতে শুরু হয় দুর্গোৎসব। মহালয়ার দিন থেকে বাড়ির ঢেঁকিতে এই পুজোর সামগ্রী তৈরি করা হয়। 

অষ্টমীতে কুমারী পুজো করা হয়। সেইদিনই দরিদ্র সেবার আয়োজন করে দত্ত পরিবার। পরিবারের অনেক সদস্যই কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে ও বিদেশে থাকেন, কিন্তু পুজোর ক'টা দিন রায়গঞ্জের মোহনবাটির পারিবারিক দুর্গোৎসবে শামিল হয়ে আনন্দ উপভোগ করেন সকলে। পুজোর শেষদিনে ভরা অর্থাৎ লক্ষীর ঝাঁপী বাড়ির কোনও পুরুষ দুর্গা মন্ডপ থেকে মাথায় করে ঘরে নিয়ে যায়। এটা দত্ত বাড়ির পুজোর অন্যতম রীতি।