কার্নিভাল দেখতে গিয়ে প্রাণহানি, মৃতের পরিবারের পাশে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী

শুক্রবার রায়গঞ্জে অনুশীলনী ক্লাবের কার্নিভালে পরিক্রমাকারী গরুর গাড়ি থেকে গরু বেলাগাম হয়ে ছুটে বেড়িয়ে যায়। এবং সেই গরু উর্দ্ধশ্বাসে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করলে আহত হন

কার্নিভাল দেখতে গিয়ে প্রাণহানি, মৃতের পরিবারের পাশে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: মাল নদীর হড়পা বানের পরও টনক নড়েনি। ফের দুর্গা পুজোর কার্নিভাল দেখতে গিয়ে মর্মান্তিক ভাবে গরুর তাণ্ডবে প্রাণ হারালেন এক প্রৌঢ়। এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনায় মৃতের মেয়ে জুলি কর্মকার বলেন, "পুজোর কার্নিভাল আসছে বছর আবার হবে, কিন্তু আমি আমার বাবাকে আর ফিরে পাবো না। এই ঘটনার জন্য যেমন ক্লাব কর্তৃপক্ষ দায়ি তেমনই দায়ি জেলা প্রশাসনও। আমি ওই ক্লাব ও জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করব।''   

শুক্রবার রায়গঞ্জে অনুশীলনী ক্লাবের কার্নিভালে পরিক্রমাকারী গরুর গাড়ি থেকে গরু বেলাগাম হয়ে ছুটে বেড়িয়ে যায়। এবং সেই গরু উর্দ্ধশ্বাসে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করলে আহত হন বহু মানুষ। গরুর সিং-এর আঘাতে গুরুতর আহত হন রায়গঞ্জ শহরের ভারত সমাজ সেবক সংঘের পুজো কমিটির সভাপতি সাধন কর্মকার। দ্রুত তাঁকে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু রাত দু'টো নাগাদ মৃত্যু হয় সাধন কর্মকারের। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়। 

 কার্নিভালে এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ প্রশাসন এবং অনুশীলনী ক্লাব কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন মৃত সাধন কর্মকারের মেয়ে জুলি কর্মকার। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতার অভাবেই এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন তাঁরা। কার্নিভালকে ঘিরে মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে রায়গঞ্জের তৃনমূল বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার পি এ সি'র চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যানী জানিয়েছেন, অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা সকলেই এই ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। বিধায়ক নিজে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে ২ লক্ষ টাকা সহায়তা প্রদান করবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে জেলাশাসক পূর্নাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, রায়গঞ্জ শহরের অনুশীলনী ক্লাব গরুর গাড়িতে প্রতিমা সাজিয়ে কার্নিভালে অংশগ্রহণ করেছিল। প্রথমদিকে সবকিছু ঠিক থাকলেও পরবর্তী সময়ে মানুষের ভিড়, বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ ও লাইটের প্রভাবে দুটি গরু দড়ি ছিঁড়ে বেড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। পরবর্তী সময়ে প্রতিমা উল্টে দিয়ে গরু দুটি এদিক-ওদিক দৌড়তে শুরু করে। 

এদিকে এই ঘটনায় কার্নিভাল দেখতে আসা একাধিক মানুষ আহত হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিকেলের সিসিইউতে সাধন কর্মকার নামে ষাটোর্ধ এক ব্যাক্তি চিকিৎসা চলছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা ও রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সানা আখতার তড়িঘড়ি রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ছুটে আসেন।

জানা গিয়েছে, সেখানেই সিসিইউতে চিকিৎসা চলাকালীন সাধন কর্মকার নামের ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এদিকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই পরিবারের সদস্যরা রায়গঞ্জ গর্ভামেন্ট ও মেডিকেল কলেজে চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। গোটা ঘটনায় শোকস্তব্ধ এলাকা।