বয়রা মায়ের ভোগে নিবেদন করা হয় বোয়াল সহ পাঁচ রকমের মাছ, জানুন কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজোর ইতিহাস

এখানকার ঐতিহ্যবাহী এই বয়রা কালীপুজোতে শোল, বোয়াল সহ পাঁচ রকমের মাছ ও পাঁচ রকমের সবজি দিয়ে মায়ের ভোগ হয়।

বয়রা মায়ের ভোগে নিবেদন করা হয় বোয়াল সহ পাঁচ রকমের মাছ, জানুন কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজোর ইতিহাস

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: হাতে গোনা আর মাত্র দু'দিনের অপেক্ষা, তারপরই শুরু হবে আলোর উৎসব। শ্যামা মায়ের আরাধানায় মাতবে আপামর বাঙালি। মহানগর থেকে জেলায়-জেলায় দীপাবলির আরাধনার প্রস্তুতি তুঙ্গে। শুধু তাই নয়, শ্যামা মায়ের আরাধনার প্রস্তুতিতে মেতে উঠেছে কালিয়াগঞ্জবাসী।

এখানকার ঐতিহ্যবাহী এই বয়রা কালীপুজোতে শোল, বোয়াল সহ পাঁচ রকমের মাছ ও পাঁচ রকমের সবজি দিয়ে মায়ের ভোগ হয়। দীপাবলির আমাবস্যায় বয়রা কালীমাতার পুজোকে ঘিরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে কালিয়াগঞ্জ শহরে। টিনের চালার আর বাশের বেড়ার মন্দির থেকে আজ বিশালাকার মন্দির তৈরি হয়েছে। মৃন্ময়ীর মূর্তির বদলে মায়ের অষ্টধাতুর মূর্তি বসেছে। দীপাবলির রাতে দেবীর সারা  অঙ্গজুড়ে থাকে সোনার অলঙ্কার। মানত পুরন করতে হাজার হাজার ভক্ত আসেন পুজো দিতে এই বয়রা মায়ের কাছে। 

কথিত আছে শ্রীমতি নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা আর বজরা নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে বানিজ্য করতে আসতেন বনিকেরা। নৌকা নোঙর করে বিশ্রাম নিতেন নদীর ধারে জঙ্গলাকীর্ণ অরন্যে। সেখানেই বয়রা গাছের নীচে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এক বনিক৷ দেবীর স্বপ্নাদেশ পান ওখানেই মূর্তি দিয়ে কালীপুজো করার৷ সেই বয়রা গাছের তলায় প্রথম পুজো শুরু হয় উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কালীমন্দির " বয়রা কালীবাড়ি " র পুজো। পরবর্তিতে কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা সেই জঙ্গল পরিস্কার করে তৈরি করে বাঁশ ও মাটির  মায়ের মন্দির। এরপর ১৯৬২ সালে তৈরি হয় দেবীর নতুন মন্দির যা আজ বয়রা কালীমন্দির নামে বিখ্যাত। 

মায়ের মূর্তিও হয়েছে অষ্টধাতুর। দীপাবলির রাতের বয়রা কালীবাড়ির পুজোকে ঘিরে কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট সহ উত্তরবঙ্গের মানুষের আলাদা উন্মাদনা থাকে। কয়েক লক্ষ পূন্যার্থীর সমাগম ঘটে দীপাবলির রাতে।  দুই-তিন হাজার পাঠাবলি হয়ে থাকে। কিন্তু? করোনা অতিমারি কারনে সরকারি বিধি মেনে সম্পূর্ণ রুপে বলি প্রথা বন্ধ আছে।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারন মানুষ দাবি করে এসেছে বলি প্রথা বন্ধ করতে । কারোও নিজের মনস্কামনা  পুরনোর জন্য নিরীহ প্রাণীকে হত্যা করা ঠিক নয়। করোনা অতিমারি কারনে দীর্ঘদিন ধরে বলি প্রথা বন্ধ থাকায় সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সকলের দাবি কে প্রাধান্য দিয়ে মন্দির কমেটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলিদান প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হলো।