সর্ষের মধ্যেই ভূত, ৪ বছর ধরে রেশন পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা কাঠগড়ায় পঞ্চায়েত প্রধান

গ্রামবাসীদের অভিযোগ গত চার বছর ধরে এই জিআর থেকে তাঁরা বঞ্চিত। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর বাড়িতে বারবার গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন তাঁরা।

সর্ষের মধ্যেই ভূত, ৪ বছর ধরে রেশন পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা কাঠগড়ায় পঞ্চায়েত প্রধান

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: দুর্নীতি নিয়ে বর্তমানে বেজায় সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এবার গরিব মানুষের রেশন আত্মসাৎ-এর অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে। যদিও এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ওই পঞ্চায়েত প্রধান।

ঘটনাটি ঘটেছে, হুগলি জেলার পোলবো দাদপুর ব্লকের সাটিথান পঞ্চায়েতের সিকটা গ্রামে। সিকটা গ্রামের বেশকিছু গরিব মানুষ বিশেষত যারা বৃদ্ধ কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন, প্রতিবন্ধী এমন দুঃস্থ মানুষজনদের জেনারেল রিলিফ (GR) দেওয়া হয়। মাসে ১২ কেজি করে চাল বিনামূল্যে তাঁরা পেয়ে থাকেন।

জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের অভিযোগ গত চার বছর ধরে এই জিআর থেকে তাঁরা বঞ্চিত। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর বাড়িতে বারবার গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন তাঁরা। এই বিষয়ে পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী পঞ্চায়েতকে বিষয়টি জানান। সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলারের কাছেও খোঁজ নেন তাঁরা। কিন্তু কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। 

গ্রামবাসী শেখ জন্নুর আহম্মদ, আবু তালেম মন্ডলরা জানান, চার বছর ধরে জিআর পাচ্ছেন না তাঁরা। আগে মাসে ১২ কেজি করে চাল গম দিত, এখন গত চার বছর ধরে তা অমিল। পঞ্চায়েত থেকে সদস্য সবাইকে ব্যাপারটি জানানো হয়েছে তারপরও কোনও সুরাহা মেলেনি। পঞ্চায়েত সদস্যের আশ্বাস সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

এই বিষয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ঝুমা চক্রবর্তী বলেন, ''গরিব মানুষেরা জিআর প্রাপক। তাঁরা জিআর পায়নি বলে আমার বাড়িতে এসে বলছেন খাদ্য পাচ্ছেন না। কেন তাঁরা জিআর পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে পঞ্চায়েতের কাছে জানতে চাইলে পঞ্চায়েত আমাকে কিছু জানায়নি। উল্টে তাঁরা জানিয়েছিল, আমাদের জিআর দেওয়া হয়ে গিয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, জিআর বিলি হয়নি। তাঁরা কি করেছে সেটা বলতে পারবো না। ৫১ জন জিআর প্রাপক প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে  জিআর পাচ্ছেন না। জিআর রেশন ডিলার দিচ্ছেন না, তার সঙ্গে প্রধান জড়িত রয়েছেন। পঞ্চায়েতের কাছে জানতে গেলে আমাকে কিছুই জানানো হয় না। অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পঞ্চায়েতের ভেতরেই রয়েছে ঘুঘুর বাসা।''

পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী অসিত কুমার চক্রবর্তী বলেন, ''জিআর কেন পাচ্ছেন না তা নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঝামেলা করা হচ্ছে। বিষয়টি খোঁজ নিতে পঞ্চায়েতে গেলে তারা জি আর লিস্ট দিতে পারেনি। রেশন ডিলারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়ে দেন, আমার কাছে যা জি আর ছিল তার সমস্ত বিলি করা হয়ে গিয়েছে। প্রধান আমাকে চিঠি করে দিয়েছে। পরে প্রধানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানিয়ে দেন আমাদের কাছে মেল ঢোকেনি।''  

 এদিকে পঞ্চায়েত প্রধান অম্বালিকা ঘোষ বলেন, ''জিআর নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। চার বছরের নয়, দু বছরের জিআর বাকি ছিল। ব্লক থেকে যে কোনও কারণে মেইল না আসার কারণেই সমস্যা হয়েছে। পরে মেল পেয়ে আমরা জি আর বিলি করছি। জি আরের জন্য পঞ্চায়েতের কাছে কেউ অভিযোগ জানাতে আসেনি। পঞ্চায়েতের সদস্য যে অভিযোগ করছে তার সম্পূর্ণ মিথ্যা।''