INDIA VS BHARAT Controversy: 'ইন্ডিয়া' নয় পাঠ্যপুস্তকে লেখা হোক 'ভারত', NCERT-র প্রস্তাবে তুঙ্গে তরজা

ভারতের নাম ইংরেজিতে 'ভারত' করা উচিত।' কারণ, 'ইন্ডিয়া' নামটি গ্রীক শব্দ 'ইন্দু' থেকে এসেছে। এই নামটি ভারতের পুরো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে না। জানুন বিস্তারিত...

INDIA VS BHARAT Controversy: 'ইন্ডিয়া' নয় পাঠ্যপুস্তকে লেখা হোক 'ভারত', NCERT-র প্রস্তাবে তুঙ্গে তরজা
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: রাজনীতির আঙিনা ছাড়িয়ে এবার 'ভারত' বনাম 'ইন্ডিয়া' বিতর্ক পৌঁছে গেল বিদ্যায়তনেও। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (NCERT) সম্প্রতি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গিয়েছে, এবার থেকে সমস্ত স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে 'ইন্ডিয়া'-এর পরিবর্তে 'ভারত' শব্দটি ব্যবহার করা হবে। এই সিদ্ধান্তটি NCERT-এর একটি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে, যা দেশের নামের উৎস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে গবেষণা করেছে। ইতিমধ্যেই NCERT এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। 

কমিটির চেয়ারপার্সন সি আই আইজ্যাকের জানান, 'ভারত' (Bharat) নামটি প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। তিনি বলেন, ''এই পরিবর্তনটি দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে। এই সিদ্ধান্তটি কিছু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করেছন যে এটি একটি অপ্রয়োজনীয় পরিবর্তন যা দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।'' অন্যদিকে, অনেকে মনে করে যে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ যা দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে আরও ভালভাবে প্রতিফলিত করবে। এনসিআরটি-এর সিদ্ধান্তটি 2024-25 শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হবে। এর মানে হল যে, নতুন পাঠ্যপুস্তকগুলিতে 'ভারত' নামটি ব্যবহার করা হবে। ভারতের নাম পরিবর্তন নিয়ে বহুদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। এবার সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল এনসিইআরটি।

এদিকে সব পাঠ্য বইতে 'ইন্ডিয়া'র বদলে দেশের নাম 'ভারত' করার সুপারিশ করেছে তারা। এনসিইআরটির এই সুপারিশকে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি। তাদের মতে, 'ইন্ডিয়া' নামটি ঔপনিবেশিক শাসনের সময় ব্রিটিশরা দিয়েছিল। ফলে, এই নামটি বাদ দিয়ে 'ভারত' নামটি ব্যবহার করা উচিত।কিন্তু কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দল এই সুপারিশের বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, 'ইন্ডিয়া' নামটি স্বাধীনতার পর থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই, এই নামটি পরিবর্তন করা উচিত নয়।এনসিইআরটির এই সুপারিশ নিয়ে দেশের বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এই সুপারিশ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সাহায্য করবে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এই সুপারিশ কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এনসিইআরটির এই সুপারিশ দেশের নাম বিতর্ককে আরও জটিল করে তুলবে। এই বিতর্কের সমাধান কীভাবে হবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। নতুন জাতীয় পাঠ্যক্রম ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় এনসিইআরটি তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য নতুন পাঠ্যক্রম তৈরি করছে। এই পাঠ্যক্রমে ভারতীয় সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর জোর দেওয়া হবে। এই কমিটিতে ফিল্ড মেডেল বিজয়ী মঞ্জুল ভার্গব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য অর্থ উপদেষ্টা বিবেক দেবরায়, আরএসএস অনুমোদিত ‘সংস্কৃতি ভারতী’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য চামু কৃষ্ণ শাস্ত্রী, সমাজসেবী সুধা মূর্তি এবং গায়ক শঙ্কর মহাদেবা রয়েছেন।

এদিকে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণপত্রে এবং সরকারি নথিতে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’র বদলে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারত’ এবং ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া’র বদলে ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত’ লেখার ফলে দেশের নাম পরিবর্তনের জল্পনা শুরু হয়েছে। সমর্থনকারীরা  এ বিষয়ে  বলেছেন, 'ভারতের নাম ইংরেজিতে 'ভারত' করা উচিত।' কারণ, 'ইন্ডিয়া' নামটি গ্রীক শব্দ 'ইন্দু' থেকে এসেছে। এই নামটি ভারতের পুরো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে না। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা  করা হয়নি।