মমতাবালার বিরুদ্ধে মতুয়া সম্প্রদারের টাকা তছরূপের অভিযোগ, আদালতের দ্বারস্থ শান্তনু

রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার কেস ডায়েরি  আদালতে জমা দিয়ে বলেন, 'এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মমতাবালা ঠাকুরের নামে।ওনার ট্যাক্সের কাগজ জমা পড়েছে। পড়ুন বিস্তারিত...

মমতাবালার বিরুদ্ধে মতুয়া সম্প্রদারের টাকা তছরূপের অভিযোগ, আদালতের দ্বারস্থ শান্তনু
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: কাকিমা তথা তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের বিরুদ্ধে মতুয়া সম্প্রদায়ের টাকা তছরুপের অভিযোগ করেছেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur)। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তছরুপের অভিযোগ তুলে এবং মতুয়া সম্প্রদায়, ঠাকুর বাড়ি ও বারোলি মেলার দায়িত্ব পালনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা করেন শান্তনু। বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশ মতো রাজ্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কেস ডায়েরি জমা দিল আদালতে। মমতাবালা ঠাকুরের নামে থাকা ওই অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা আছে বলে আদালতে জানায় রাজ্য। মমতাবালা ঠাকুরকে আয়করের সমস্ত তথ্য আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। এর মাঝে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধ কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। আয়কর দফতরকে মামলায় পার্টি করার নির্দেশ বিচারপতির। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১ এপ্রিল।

এদিন আদালতে মমতাবালা ঠাকুরের আইনজীবীর উদ্দ্যেশ্য বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, 'আপনি সংঘধিপতি, তার আইনি কাগজ দেখান। কিসের ভিত্তিতে আপনি এই সংঘের দায়িত্ত্ব পালন করছেন? আপনার নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তার আয়কর রিটার্নের কাগজ কোথায়?' এরপরই মমতাবালা ঠাকুরের আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, 'বড়মা এই বংশের সিনিয়র সদস্য হিসাবে এবং এই সংঘের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে আমায় দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। বীণাপাণি দেবীর মৃত্যুর পর মমতাবালা ঠাকুর এই সংঘের সংঘধিপতি। শান্তনু ঠাকুর সংঘধিপতি পদ কোনওদিন পাননি। তাই এই টাকা অন্যের প্যান কার্ড দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যাবহার করছে। এটা নিয়ে পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানানো হয়েছে।

বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন: এই টাকা আপনার নয়? 
মমতা বালা ঠাকুরের আইনজীবী বলেন : না 

রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার কেস ডায়েরি  আদালতে জমা দিয়ে বলেন, 'এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মমতাবালা ঠাকুরের নামে।ওনার ট্যাক্সের কাগজ জমা পড়েছে। সংঘধিপতি নামে কোনও অ্যাসোসিয়েট পদ সরকারিভাবে নেই। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন: এই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড, ফোন নম্বর কার কাছে আছে? ওটিপি যার কাছে যায় সেই অ্যাকাউন্টটি নিয়ন্ত্রণ করে, একথা বলাই বাহুল্য। তার উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন: পুলিশ একটা অভিযোগ পেয়েছে মমতাবালা ঠাকুরের কাছ থেকে। সেখানে সংঘের পক্ষ থেকে তিনি জানিয়েছেন, এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তাঁর নামে খোলা হয়। তাঁর প্যান কার্ড। কিন্তু টাকা তুলছে অন্য কেউ। তাই তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন। এক কোটির বেশি টাকা ওখানে আছে। তাই তিনি  চিন্তিত।পুলিশ একটি অভিযোগ পেয়ে এফআইআর দায়ের করেছে। পুলিশ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিশ কী ভুল করেছে? কোন ফোন নম্বরে ওটিপি যায় এবং সেই ফোন নম্বরটি কার, তার তদন্ত করছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/TMC-Candidate-Kriti-azad-election-campaign-at-durgapur-areas

বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন: পুলিশের দায়িত্ব দুর্নীতিটা কোথা থেকে হচ্ছে, তা খুঁজে বার করা। শান্তনু ঠাকুরের আইনজীবী জয়দীপ কর বলেন: মমতাবালা ঠাকুর সংঘধিপতির দায়িত্ব পেয়েছেন বড়মার কাছ থেকে। তার মানে সংঘ এবং তার আর্থিক দায়িত্ত্ব তাঁর।পুলিশের কাছে অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেছেন তিনি। কিন্তু পুলিশ  তদন্তের ব্যাপারে খুব নির্বাচিত। তাহলে পুরনো অ্যাকাউন্টে ২০১০ সাল থেকে কেন কোনও আয়কর রিটার্ন হয়নি? এই সংঘের নতুন অ্যাকাউন্ট হয় ২০১৮ সালে।তারপর থেকে মমতাবালা ঠাকুরের হাতে দায়িত্ব। এই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হচ্ছে সেটা তিনি বুঝলেন দীর্ঘদিন পর। অভিযোগ দায়ের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই অ্যাকাউন্টটি সিল করেছে পুলিশ। এর থেকে পরিষ্কার পুলিশ তদন্ত নিয়ে খুব নির্বাচিত।