শীত পরতেই গুড়ের মিষ্টি-সন্দেশে মজে মাজদিয়াবাসী

শীত পরতেই গুড়ের মিষ্টি-সন্দেশে মজে মাজদিয়াবাসী

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: খাদ্যরসিক বাঙালির কাছে শীতকাল মানেই হল রকমারি মিষ্টি। এখনও পর্যন্ত ঠান্ডা সেভাবে গায়ে না লাগলেও খেজুর গাছের গায়ে বাঁধা হাঁড়ি কিন্তু জানান দিচ্ছে, শীত এসে গিয়েছে। কারণ, শীতে খাবার বলতেই  প্রথম যেটি মাথায় আসে, সেটি হল নলেন গুড়। ঘরের পিঠে-পুলি,  পায়েস তো বটেই, দোকানের রকমারি মিষ্টি তৈরিতেও তার মহিমা কম নয়। ভাল মানের গুড় পেতে গেলে সারা বছর তাই চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করেন গুড়প্রেমী মানুষ। শুধু তাই নয়, নলেন গুড়ের মিষ্টি এবং সন্দেশও একইভাবে বিখ্যাত।  

শীতকালে শিউলিরা সকালবেলায় খেজুর গাছের ওপরে হাড়ি বেঁধে আসে। এরপর সেই হাড়িতে ফোঁটা ফোটা করে খেজুর গাছের রস জমা হয়। সেই রস জমা হওয়ার পর তা  আগুনে জাল দিয়ে তৈরি করা হয় সাধের নলেন গুড়। শীতকালে এই নলেন গুড় দিয়ে একাধিক মিষ্টান্ন পিঠেপুলি এবং হরেক রকম খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা হয়। কলকাতা ও শহরতলিতে নলেন গুড়ের একাধিক মিষ্টি পাওয়া গেলেও নদীয়ার মাজদিয়ার প্রসিদ্ধ নলেন গুড়ের বানানো মিষ্টি ও সন্দেশ জগৎজোড়া বিখ্যাত।

এই নলেন গুড় প্রথমে কিনে আনেন মিষ্টি প্রস্তুতকারীরা। এরপর তা দিয়ে বানানো হয় নলেন গুড়ের মাথা সন্দেশ, নলেন গুড়ের রসগোল্লা, এমনকি বর্তমানে নলেন গুড় দিয়ে দই এবং আইসক্রিমও বানানো হচ্ছে বলে শোনা যায়। যা খেতে ভিড় জমান ৮ থেকে ৮০ সকলেই। প্রতি বছরের মত এ বছরও মাজদিয়ার প্রায় সমস্ত মিষ্টির দোকানেই ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে নলেন গুড় দিয়ে বানানো রসগোল্লা ও সন্দেশের কেনাবেচা। সাধারণ দিনে তুলনায় শীতকালে নলেন গুড়ের মিষ্টি কিনতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায় ক্রেতাদের। এই মিষ্টি শুধুমাত্র নদীয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এই মিষ্টি পাঠানো হয় জেলার বাইরে বিভিন্ন জায়গায়তেও। একটা সময় বাংলাদেশেও এই মিষ্টি আর গুড় চলে যেতো। 

আশ্চর্যের বিষয় কলকাতা ও শহরতলী এলাকার নলেন গুড়ের মিষ্টি ও রসগোল্লার দামের তুলনায় এই সমস্ত মিষ্টির দোকানের মিষ্টির দাম তুলনামূলকভাবে কম হয়। প্রতিপিস মিষ্টি ন্যূনতম ৬ টাকায় পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন মিষ্টি বিক্রেতা। স্বাভাবিকভাবেই বলা যেতে পারে শীতকালে প্রতিবছরের মত এ বছরও নলেন গুড়ের স্বাদ নিতে মাজদিয়ার গুড় এবং রসগোল্লা খোঁজ করে থাকেন নদীয়াবাসী।